সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের বাসায় গুলি

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২৩
0

ডেস্ক রিপোর্ট :

রাষ্ট্রক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) লড়াইয়ের শুরুতেই বিবাদমান দুই সশস্ত্র বাহিনীর গোলাগুলি খার্তুমের বাংলাদেশ দূতাবাসে আঘাত হেনেছে।

গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমাদের বাসায় আঘাত হেনেছে মেশিনগানের গুলি। এক সপ্তাহ পর, ২২ এপ্রিল বিবদমান দুই পক্ষের লড়াইয়ের সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়ে। তবে গোলাগুলির এই দুই ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কেউ হতাহত হননি।

সুদানের বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাসা এবং দূতাবাসে হামলার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, আমার বাসায় মেশিনগানের গুলির আঘাত হানার পরও আমরা খার্তুমে বসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ২০ এপ্রিল ইউরোপের এক বন্ধুপ্রতিম দেশের পরামর্শে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মিশন ও বাসা ছেড়ে রীতিমতো অজানার উদ্দেশে যাত্রা করি। এ সময় গাড়িতে স্ত্রী, সহকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে সাতজন যাত্রা ছিলেন। এলাকা ছিল জনশূন্য। একটু পরপরই আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করছেন। গন্তব্য অজানা থাকলেও একপর্যায়ে ঠিক হলো দূতাবাসের তৃতীয় সচিব এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা যে এলাকায় থাকেন, সেখানে যাওয়া হবে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুদানে সঙ্ঘাত শুরুর পর থেকে ঢাকার সাথে খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের কূটনীতিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত খার্তুমে অবস্থান করে কাজ চালিয়ে গেছেন। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিনি গত রোববার খার্তুম থেকে প্রায় ২৫০ মাইল দূরের জাজিরা প্রদেশের মাদানি শহরে অবস্থান করছেন। সেখানে অবস্থান করেই বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপদে ফেরানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছেন।

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সুদানে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশী রয়েছেন। এর মধ্যে খার্তুমেই প্রায় এক হাজার ২০০ বাংলাদেশী রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম দফায় ৫০০ বাংলাদেশীকে এপ্রিলের শেষে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। শুরুতে ১০টি বাসে ৫০০ বাংলাদেশীকে পোর্ট সুদান নামের একটি শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে জাহাজ বা ফেরিতে করে জেদ্দায় যাবে তারা।

এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকদের নিরাপদে অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যে এই বার্তা সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে।