সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ে শিশু-বৃদ্ধসহ ৬ জন আহত

আপডেট: মার্চ ৭, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ে ৬ জন গুরুত্বরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু এখানে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন না থাকায় তাদের নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তারা সেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে বাড়ি ফিরলেও ২ শিশুর আঘাত গুরুত্বর হওয়ায় তারা ভোগান্তিতে পড়েছে।

কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা হলেন, শহরের সাহেবপাড়া রেলওয়ে হাসপাতালের পিছনের এলাকার কামালের দুই ছেলে ইসমাইল (৭) ও ইব্রাহিম (১২), মিস্ত্রিপাড়ার মুন্নার স্ত্রী শাবানা (৩০), মনির হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি রবিউল ইসলাম (৪০), মোস্তাফিজুর (৬৬) এবং একটি ৬ বছরের শিশু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২ টার দিকে কামালের ছেলে ইসমাইল বাড়ির পাশে রাস্তায় খেলার সময় হঠাৎ করে পিছন থেকে একটি কালো রংয়ের কুকুর এসে পড়নের প্যান্টের উপর দিয়েই নিতম্বে কামড়ে ধরে। এসময় বড় ভাই ইব্রাহিম তাকে উদ্ধার করতে গেলে তার পায়েও কামড় দেয় কুকুরটি। পরে দুই ভাইয়ের আর্তচিৎকারে পাশের পাপ্পু টেইলার্সে বসা লোকজনসহ পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

এদিকে দুপুর ২ টার দিকে শহরের মিস্ত্রিপাড়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে কালো রংয়ের একটি কুকুর হঠাৎ পায়ে কামড়ে দেয় মুন্নার স্ত্রী শাবানাকে। এসময় এলাকার আরও ৩ জনকে কামড় দেয় কুকুরটি বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পৌরসভার ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মোছাঃ রুবিনা সাকিল।

কুকুড়ের কামড়ে আক্রান্তরা দ্রুত সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের তাৎক্ষনিক নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে তারা সেখান থেকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে তা শরীরে পুশ করেন।

সৈয়দপুরে প্রায়ই কুকুরের কামড়ে লোকজন আক্রান্ত হলেও এখানে ভ্যাকসিন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নয়তো সরকারী হাসপাতালের বাইরে কোন ফার্মেসী থেকে অতিরিক্ত দামে ভ্যকাসিন কিনে ব্যবহার করতে হয়। দরিদ্র মানুষের পক্ষে তা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারী দিয়ে নানা ঝক্কি ঝামেলা পোহায়ে তারপর ভ্যাকসিন নিতে হয়।

এতেও তাদের অনেকটা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। অথচ সৈয়দপুরে ১০০ শয্যা হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হতো তাহলে তারা সে সুবিধা ভোগ করতে পারতো। তাদের দাবি পূর্বের মতো এখনও সৈয়দপুরে অতি প্রয়োজনীয় এ ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থা করা হোক।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ওমেদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের হাসপাতালে আসামাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক দ্রুত ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তারা সেখানে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং এখন সুস্থ আছেন। সৈয়দপুরে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং সব সময় প্রয়োজন না হওয়ায় জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলেই তা সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।