সৈয়দপুরে প্রেমিকাকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারন : তিন বন্ধু গ্রেফতার

আপডেট: মে ২, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর(নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রেমিকাকে ধর্ষনের ভিডিও ধারনের মামলায় ধর্ষকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১মে) দিবাগত রাতে ওই তিন বন্ধুকে পৃথক পৃথক স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ধর্ষনের ভিডিওটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এরা হলেন সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ মুন্না (২৫), একই গ্রামের পাঠানপাড়ার শওকত আলীর ছেলে মোঃ আলাল (২৫) ও আমজাদের মোড়ের শহিদুল ইসলামের ছেলে তৌফিক ইসলাম তুহিন (২০)। তিনজনই পরস্পরের বন্ধু।

জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার মাদ্রাসা ছাত্রী সাথী আকতারের (ছদ্মনাম) সাথে ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই পাড়ার মোঃ মুন্নার। ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পাঠানপাড়ার আলালের বাড়িতে দেখা করে মুন্না ও সাথী। এ সময়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সাথীকে ধর্ষন করে মুন্না। প্রেমিক কৌশলে ওই ধর্ষনের ঘটনাটি মোবাইলে ধারন করে।

পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারী সাথী আকতারের সাথে একই গ্রামের মশিউর রহমানের পুত্র আশিকুর রহমানের সাথে বিয়ে সুসম্পন্ন হয়। সুখের সংসারে বিপত্তি দেখা দেয় চলতি বছরের ১০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে।
সাথীর সাথে মুন্নার অপর বন্ধু তুহিন দেখা করে তাকে জানায়, মুন্নার সাথে তার (সাথীর) ধর্ষনের একটি ভিডিও তার কাছে রয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৪ এপ্রিল সাথী আকতার সৈয়দপুর প্লাজার ‘বার্গার কিং’ নামে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে তুহিনের সাথে দেখা করে। তুহিন Jannatun Ferdaus Alo Jannat নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপসটি দেখায় সাথীকে। পরে সেটি ডিলিট করার জন্য অনুরোধ জানালে তুহিন ২ লাখ টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশা করার প্রস্তাব দেয় সাথী আকতারকে। এতে অসম্মতি জানিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে যায় সাথী।

শনিবার (১ মে) সকালে তুহিন মোবাইল ফোনে সাথীকে আবারো টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ভিডিওটি ইন্টারনেট ও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে সাথী আকতার নিজে বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান জানান, মামলার পরপরই শহরের পাঁচমাথা মোড় থেকে তৌফিক ইসলাম তুহিন, আমজাদের মোড় থেকে মোঃ আলাল এবং নিজ বাড়ি থেকে মোঃ মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১)/৩০ তৎসহ পর্ণগ্রাফি আইন ২০১২ এর ৮(১/২/৭) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচাজ আবুল হাসনাত খান জানান, রোববার ভিকটিমকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

শাহজাহান আলী মনন
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি