সোনারগাঁয়ে মাঠ দখল করে গাছ কেটে রাস্তা নির্মাণ

আপডেট: ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
0

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার ঐতিহাসিক আমিনপুর মাঠ দখল করে অর্ধশত বিভিন্ন ফলজ ও বনজ কাছ কেটে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত দুদিন ধরে গাছগুলো কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ওই মাঠের লিজ মালিক সোনারগাঁ গঙ্গাবাসি ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সুলতান মিয়া পৌরসভা প্রশাসক ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানুল ইসলামের কাছে একটি আপত্তি পত্র দাখিল করেন। এ অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশিনার ভূমি ও সোনারগাঁ উপজেলা বন কর্মকর্তাকে অনুলিপি প্রদান করেছেন। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সোনারগাঁ পৌর এলাকার ঐতিহাসিক আমিনপুর মাঠ ১৯৮৩ সাল থেকে সোনারগাঁ গঙ্গাবাসি ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ১একর ৭৪ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এ মাঠের চার পাশে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ফলজ ও বনজ গাছ লাগিয়েছে। সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী পরিবারের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এ রাস্তা নির্মাণ করতে ওই মাঠের পশ্চিম পাশের ২৮ট্ি বড় গাছসহ প্রায় অর্ধশত গাছ কাটতে হয়। ফলে সোনারগাঁ গঙ্গাবাসি ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিংবডির আপত্তি থাকায় ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. সুলতান মিয়া পৌরসভা প্রশাসক ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানুল ইসলামের কাছে একটি আপত্তি পত্র দাখিল করেন।
সোনারগাঁ গঙ্গাবাসি ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, মাঠের পাশ দিয়ে রাস্তা নিতে হলে এখানের প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে নির্মাণ করতে হয়। এছাড়া মাঠের জায়গা সংকোচিত হয়ে পড়ে। একটি পরিবারের জন্য এ রাস্তা নির্মাণ হাস্যকর। প্রধানমন্ত্রী গাছ লাগাতে বলেছেন। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র।

সোনারগাঁ গঙ্গাবাসি ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আশরাফুল আলম বলেন, এ মাঠের জায়গার গাছ কেটে রাস্তা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে।
সোনারগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তা নির্মাণের জন্য ছোট কয়েকটা গাছ কাটা হয়েছে। তবে বড় বড় গাছগুলো এড়িয়ে এ রাস্তা নির্মাণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর
খাল দখলে সামাজিক সংগঠন

সামাজিক সংগঠনের নামে খাল দখল করে স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এতে মুছে যেতে বসেছে কল্যান্দী খালের শেষ চিহ্নটুকু। গত বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যান্দী এলাকায়
সামাজিক সংগঠনের নামে খাল দখল করে স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এতে মুছে যেতে বসেছে কল্যান্দী খালের শেষ চিহ্নটুকু। গত বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যান্দী এলাকায়ছবি: প্রথম আলো
খালটি দিয়ে ২০ বছর আগেও নৌকা চলাচল করত। ছিল বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। দখলদারদের কারণে সেই খালের অবস্থা এখন যায় যায়। খালের অনেকটা জায়গা এরই মধ্যে নিশ্চিহ্ন। যেটুকু অবশিষ্ট আছে, তাতে নজর পড়েছে ‘প্রকাশ’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের। খালের প্রবহমান অংশে নিবন্ধনহীন সংগঠনটি পাকা পিলারের ওপর গড়ে তুলেছে একটি ঘর।
‘কল্যান্দী’ নামে খালটির অবস্থান নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দী এলাকায়। বন্দরের হাজিপুর এলাকার ত্রিবেণী খাল থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি শাখা খাল কল্যান্দী আদমপুর হয়ে সাবদী এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। এর শুরুর অংশটি স্থানীয়ভাবে কল্যান্দী খাল নামে পরিচিত।

খালটির সুবর্ণ অতীত তুলে ধরেন স্থানীয় মানুষ অনেকে। জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন বলেন, ২০ বছর আগেও খালটিতে তিনি নৌকা চলাচল করতে দেখেছেন। ৩০ বছর আগে এই খালই তাদের যাতায়াতের একমাত্র উপায় ছিল। কিন্তু গত ১৫ বছরে খাল দখল এতই বেড়েছে যে কল্যান্দী এলাকায় খালটি এখন অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে।
গত বুধবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কল্যান্দী সেতুর উত্তরে প্রায় ২০০ গজ ও দক্ষিণে প্রায় ১০০ গজ এলাকায় এখনো খালের অস্তিত্ব আছে। তবে আশপাশে খালের অন্তত এক কিলোমিটারে অনেক জায়গায় বালু ভরাট করে কাঁচা–পাকা বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।
সেতুর দক্ষিণ পাশে যে অংশটি দেখে খালের অস্তিত্ব বোঝা যায়, সেখানে স্থাপন করা হয়েছে নয়টি পাকা পিলার। এসব পিলারের চারটির ওপর লোহা ও কাঠের তৈরি মাচায় নির্মাণ করা হয়েছে একটি টিনের ঘর। লাল সবুজের রঙে রাঙানো ঘরটি বাইরে থেকে তালা দেওয়া। ঘরটির একপাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এক পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো। ঘরটি প্রকাশের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেতুর উত্তর পাশেও একইভাবে খাল দখল করে আরও দুটি ছোট টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। একটি চায়ের দোকান, আরেকটি মনোহারির দোকান।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাল দখলের সঙ্গে সরাসরি স্থানীয় রাজনৈতিক লোকজন জড়িত। খালটির কোথাও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কোথাও রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে দখল করা হয়েছে। তিন বছর আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় একজন নেতা সামাজিক সংগঠন ‘প্রকাশ’–এর নামে খালের প্রবহমান শেষ অংশটুকুও দখল শুরু করেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হয়। কিন্তু পিলারগুলো সরানো হয়নি। ফলে পিলারে কচুরিপানা–আবর্জনা আটকে ক্রমেই খালের শেষ অংশটুকুও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালের এই অংশটুকু দখল হয়ে গেলে কল্যান্দী খালের আর কোনো চিহ্ন থাকবে না।
স্থানীয় একজন দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খালের মূল প্রবহমান জায়গায় সামাজিক সংগঠনের নামে যে ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি মূলত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শরিফের ব্যক্তিগত কার্যালয় হিসেবে পরিচিত। এই ঘরের ভেতরে খেলাধুলা, আড্ডা ও বিচার সালিস বসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামাজিক সংগঠন হিসেবে প্রকাশ–এর কোনো নিবন্ধন নেই। বর্তমানে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন শরিফ। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি নিজেকে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন।
খাল দখলের বিষয়ে শরিফ বলেন, ‘সরকার মনে করলে স্থাপনা সরিয়ে নেবে। এমনকি তারা চাইলে আমাদের কার্যালয়ও নিয়ে নিতে পারে। আমাদের তাতে কিছু বলার থাকবে না।’
খালের মধ্যে স্থাপনার বিষয়টি জানা নেই উল্লেখ করে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম কুদরত-এ-খুদা প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটির কাউন্সিলর মতির বিরুদ্ধে চার্জশিট
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমানের ১১ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া তথ্য মিলেছে তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনেরও।

সব মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৫৩ হাজার ২০২ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
দুদক সচিব বলেন, মতিউরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ করা হয়। পরে তিনি ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেন। তার সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬২ লাখ ৪২ হাজার ২৭ টাকা অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু দুদকের তদন্তে তার স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮ হাজার ৮৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। সম্পদ বিবরণীতে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৮২ হাজার ৭৫৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। দুদকের তদন্তকালে তার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ১১৪ টাকা জমা ও উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়।
দুদক সচিব আরও বলেন, মতিউর রহমানের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তার সম্পদ বিবরণী স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার ৬৩০ টাকা অর্জনের তথ্য ঘোষণা দেন। কিন্তু দুদকের তদন্তে তার নামে ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৬ হাজার ৭১৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপনসহ ৮ কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া তদন্তকালে বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৭৬ লাখ ১৬ হাজার ৯৪ টাকা জমা ও উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের তদন্তে কাউন্সিলর মতিউর রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৫৩ হাজার ২০২ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধরায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় চার্জশিট দাখিল করা হয়।
রাস্তার পাশে ময়লার স্তূপ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুর-চেঙ্গাইন সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ময়লার উৎকট গন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকবাসীকে।
কাঁচপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,আবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ। অপরিকল্পিতভাবে দিনের পর দিন এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে।
নাকে কাপড় ছাড়া কিংবা নিশ্বাস বন্ধ না করে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একেবারে অসম্ভব। পথচারী ও এলাকাবাসী রাস্তা দিয়ে কষ্ট করে যাতায়াত করতে পারলেও অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। ময়লার স্তূপ থেকে ৪০০ মিটার দূরে অবস্থিত চেঙ্গাইন এলাকা এবং ৩০০ মিটার দূরে অবস্থিত মোশাররফ হোসেন হাই স্কুল।

কাঁচপুর-চেঙ্গাইন পাকা রাস্তাটি ধরে পাঁচ-ছয়টি গ্রামের মানুষের যাতায়াত। দুর্গন্ধের কারণে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বসবাসরত বাসিন্দা, এলাকাবাসী, পথচারী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষকে।
কামাল হোসেন নামে এক পথচারী জানান, কাঁচপুরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা ভ্যানে করে এনে এখানে ফেলা হয়। আগে রাস্তার ধারে ময়লা ফেলা হতো, যার কারণে পাশের সড়কটির বেহাল অবস্থা হয়। বৃষ্টির সময় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ হতে পোকামাকড় রাস্তায় উঠে আসত।
আফজাল হোসেন নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, ময়লার স্তূপের কারণে এই সড়ক দিয়ে আমাদের যাতায়াত করা এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অতি দ্রুত এখান থেকে ময়লা অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জনপ্রতিনিধিদের নিকট জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।
জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ময়লার গন্ধে এখানকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে। বছরের পর বছর এই সমস্যা নিয়েই আমরা এখানে বসবাস করে আসছি। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোন নজরদারি চোখে পড়েনি আমাদের।
কাঁচপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শাহাজাহান সিরাজ বলেন, আমি নিজেও এই সমস্যার ভুক্তভোগী। আমাদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।

কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জানান, খালপাড় চেঙ্গাইন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই এই ময়লার স্তূপটি রয়েছে। আমি নিজ উদ্যোগে কয়েকবার ওই স্থান থেকে ময়লা অপসারণ করেছি এবং ওই স্থানটিতে যাতে করে কোনো ময়লা ফেলতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছিলাম। কিন্তু এর কিছুদিন পর আবারও ওই স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। তবে কে বা কারা ময়লা ফেলছে তা আমার জানা নেই। অতি দ্রুত এখান থেকে ময়লা অপসারণ করার জন্য আমি আমাদের ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলব।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রেজওয়ান উল ইসলাম জানান, আমরা ওই স্থানটিতে সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। হয়তো ওই এলাকায় ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। তাই এলাকাবাসী এখানে বারবার ময়লা ফেলছে। ময়লা অপসারণ করতে ওই এলাকার চেয়ারম্যান, এলাকাবাসীকে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সাহায্য করা হবে।

এম আর কামাল
নারায়ণগঞ্জ
তারিখ ঃ ০৫-১২-২০২২