স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে নিজের আত্মহত্যা

আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১
0

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আশুলিয়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে এক রিকশাচালক।
রোজিনা আক্তার (২৫), ৯ বছরের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার এবং রিকশা চালক সবুর আলীর (২৮) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অটোরিকশা চুরি যাওয়ার কারণে স্বামীর সাথে ঝগড়ার ফলে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি নিহতদের স্বজনদের।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার পূর্ব জামগড়ার রূপায়ন ১ নাম্বার গেট এলাকার ফজর আলীর মালিকানাধীন আধাপাকা বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত সবুর আলী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থানাধীন চরগরুক ফুলবাগি মন্ডল গ্রামের মুজাম মিয়ার ছেলে। তিনি আশুলিয়ার ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালাতেন। তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার একটি পোশাক কারখানা চাকরি করতেন ও শিশু সুমাইয়া স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল।

নিহতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দু’দিন ধরে তাদের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় ওই বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়ার। তারা তাদের পাশের কক্ষের বাঁশের সিলিংয়ের ফাঁক দিয়ে সবুরকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি আশুলিয়া থানায় জানানো হয়।

নিহতের বোন রাশেদা বেগম জানান, জমি বন্ধকের টাকা দিয়ে একটি অটোরিকশা কিনে সবুর। গেল বুধবার নতুন রিকশা নিয়ে প্রথম বের হয়। তবে সেই অটোরিকশাটি ওই দিনই চুরি হয়ে যায়। চুরির বিষয়টা ভয়ে স্ত্রীকে জানায়নি। তবে পর দিন বৃহস্পতিবার বিষয়টি টের পেয়ে যায় রোজিনা। এরপর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। মনে হচ্ছে, রিকশা চুরি যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ঝগড়া হয় এবং এই ঘটনা ঘটে।

নিহতের ভাই শহীদ জানান, তার ভাই সবুর রিকশা চালাতেন। গেল ৩ নভেম্বর জমি বন্ধক রেখে একটি রিকশা কিনেন। কিন্তু ওই রিকশা চুরি হয়ে যায়। তবে তার ভাই রিকশা চুরি যাওয়ার বিষয়টি তাকে ফোনে জানান এবং তার ভাবী যাতে জানতে না পারে সেটাও বলে দেন। পরে শুক্রবার থেকে বার বার তার ফোনে চেষ্টা করেও না পায়ে শনিবার রাতে বোন রাশেদাকে নিয়ে তার বাসায় আসেন। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় অনেক ডাকাডাকি পেরেও কোনো শব্দ না পেয়ে দরজার নিচ দিয়ে উঁকি দেন শহীদ। পরে তার ভাইকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশে খবর দেন। রিকশা চুরি যাওয়ার ঘটনা নিয়েই সম্ভবত তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।

আশুলিয়া থানার এসআই আল মামুন কবির জানান, ‘৯৯৯’-এ কল পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরেই স্ত্রী ও মেয়েকেপ্রথমে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজে আত্নহত্যা করে সবুর। ঘটনাটি দু’দিন আগের হতে পারে। লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।