স্বাধীনতার সুফল পেতে হলে বৈষম্য মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে : গোলাম রব্বানী

আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২২
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে একটি উজ্জ্বল পটভূমি রয়েছে। দেশের মানুষ শোষণ বঞ্চনাহীন একটি সোনার দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়ে আসলেও জনগণ তার কাক্সিক্ষত মুক্তি পায়নি। বরং পদে পদে দেশের আপামর মুক্তিকামী জনতার হাতে পরানো হয়েছে শ্রেণি শৃঙ্খলের বেড়ি। শ্রেণি শৃঙ্খল মানুষে মানুষে বিভেদ ও বৈষম্য তৈরি করেছে। স্বাধীনতার সুফল পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই এই শ্রেণি শৃঙ্খলের পথ থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। বৈষম্য মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তর কর্তৃক আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতিয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি মো. মহিব্বুল্লাহ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমান এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন তুরাগ মধ্য থানা সভাপতি বশির আহমদ, তুরাগ দক্ষিণ থানা সভাপতি আবু হানিফ ও উত্তরখান থানা সভাপতি ইফতেখার মো. আকন প্রমুখ।

গোলাম রব্বানী বলেন, স্বাধীনতার সুফল পেতে হলে মানুষে মানুষে বিভেদ নয় বরং হাতে হাত রাখতে হবে। রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত স্বার্থ ভুলে দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। শ্রমজীবীসহ প্রতিটি মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে সকল দল মতের মানুষদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। একটি সুস্থির গণতান্ত্রিক দেশ কেবল মাত্র সামনের পথে অগ্রসর হতে পারে। গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ছাড়া রাষ্ট্র ও সমাজ তার কাঙ্খিত গন্তবে পৌঁছাতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। কিন্তু বাস্তবে তার ফলাফল দেখা যাচ্ছে না। আজ দেশে ধনী ও গরিবের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে। শ্রমজীবী মানুষদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়ে তারা আজ ক্রমাগতভাবে দরিদ্র হচ্ছে। দুবেলা দুমুঠো ডাল ভাতের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা পরিশ্রম করতে হচ্ছে। অধিক পরিশ্রম সত্তে¡ও ন্যায্য মজুরি থেকে তারা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। শ্রমিকের রক্ত ঘামে এক শ্রেণির মানুষরা আরাম আয়েশ করে জীবন যাপন করছে। অর্থ বিত্তে তারা ফুলে ফেপে উঠেছে। দেশে বিদেশে নামে বেনামে জায়গা সম্পদ ও অর্থ সঞ্চয়ের মাধ্যমে তারা মূলত দেশের স্বাধীনতাকে বিলিন করে দিচ্ছে। সরকারকে এই ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। সকল মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে সকল ধরনের শ্রেণি পথা বাদ দিতে হবে। যারা শ্রম বিনিয়োগ করবেন তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে।

গোলাম রব্বানী চলমান দ্রব্যমূল্যের হ্রাস টেনে ধরতে সরকারের কাছে আহবান জানান। একই সাথে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঊর্ধ্বগতি শ্রমিকদের নিঃশেষ করে দিচ্ছে। তাই আর বিলম্ব না করে ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।