হামাসের প্রত্যাঘাতে ইসরাইলি সৈন্য নিহত, সামরিক যান ধ্বংস

আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২৩
0

গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণে ইসরাইলের এক সৈন্য নিহত এবং দুটি সামরিক যান ধ্বংস হয়েছে। হামাস যোদ্ধারা এই দাবি করেছে। ইসরাইলিরা দাবি করেছে, তাদের সামরিক বাহিনী গাজার অভ্যন্তরে এগিয়ে যাচ্ছে।

আল জাজিরার আরবি সংস্করণে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সাথে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যেই ইসরাইলি ট্যাংকগুলো উত্তর-পশ্চিম গাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

গত সোমবার ইসরাইলি ট্যাংকগুলো গাজা সিটির উপকণ্ঠে দেখা গেছে। তবে হামাস দাবি করেছে, তীব্র লড়াইয়ের পর ইসরাইলি ট্যাংকগুলো ফিরে যায়।

আইডিএফ জানিয়েছে, তারা স্থল অভিযানে বেশ কয়েকজন হামাস সদস্যতে হত্যা করেছে।

এদিকে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীরা দাবি করেছ, গাজা যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে তারা ইসরাইলের দিকে ড্রোন চালনা করেছিল।

হাউছি সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবেদেল আজিজ বিন বাহতুর বলেন, ‘এসব ড্রোন ইয়েমেন রাষ্ট্রের।’
এর আগে লোহিত সাগরের ওপরে একটি ড্রোন ইসরাইলের দিকে যাওয়ার সময় গুলি করে ভূপাতিত করা হয়।

ইসরাইলি বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। ডিভিওতে দেখা যায়, হামাস যোদ্ধারা বডি ক্যামেরা লাগিয়ে সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা সেখানে মোতায়েন ইসরাইলি সৈন্যদের প্রতি গুলি বর্ষণ করে।

গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকবার দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে।
ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) নিশ্চিত করেছে যে সামরিক অভিযানে তাদের দুই সৈন্য আহত হয়েছে। এদের একজন মর্টারের গোলা, অপরজন সংঘর্ষে।

বন্দী নিয়ে আলোচনার জন্য থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাতার ও মিসর সফর
ইসরাইলে হামাসের হামলার সময় এই গ্রুপের হাতে বন্দী ২২ জন থাই নাগরিকের পরিণতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার কাতার ও মিসরে ঝটিকা সফর শুরু করেছেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইসরাইলি কর্মকর্তাদের দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলে চালানো হামাসের ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ১,৪০০ জন নিহত হয়েছে। হামাসের হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। হামাসের হামলার প্রথম দিনে তাদের নির্বিচারে গুলি করে ও পুড়িয়ে মারার এবং ২৩০ জনেরও বেশি লোককে বন্দী করার পর ইসরায়েল গাজা অবরোধ করে এবং সেখানে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়।

গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় চালানো ইসরাইলের হামলায় ৮৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে ৩,০০০-এরও বেশি শিশু রয়েছে।
সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ব্যাংককের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সর্বশেষ ইসরাইলি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গাজায় হামাসের হাতে ২৩০ জনেরও বেশি জিম্মি রয়েছে। এদের মধ্যে ২২ জন থাই নাগরিক।
প্রধানমন্ত্রী রথো থাভিসিন সোমবার বলেন, তার সরকার থাই নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

বুধবার মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনার আগে তিনি মঙ্গলবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্নপ্রী বাহিদ্ধা-নুকারাকে পাঠিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পার্নপ্রী ‘ইসরাইল ও গাজায় চলমান সহিংসতার ফলে বন্দী হওয়া থাই নাগরিকদের পরিণতি নিয়ে আলোচনা করবেন।

যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সময় প্রায় ৩০,০০০ থাই নাগরিক ইসরাইলে কর্মে নিয়োজিত ছিল। এদের বেশির ভাগই কৃষি খাতে কাজ করে।

মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধে থাইল্যান্ডের কমপক্ষে ৩২ নাগরিক নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছে।

সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য