১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু

আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১
0
file photo

১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল হাই স্কুলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

জানা গেছে, স্কুলশিক্ষার্থীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার জন্য প্রতিটি স্কুলে থাকবে ২৫টি বুথ।

প্রাথমিক পর্যায়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে রাজধানীর আটটি স্কুলকে ক্লাস্টার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আট স্কুলের প্রতিটিতে গড়ে দৈনিক দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টিকা দেওয়া হবে।

আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ঢাকার আরও আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।

সরকার প্রথমে রাজধানীর ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, যথাযথ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ সুবিধা না থাকায় ১২টির বদলে আপাতত আটটি বিদ্যালয়ে এ টিকা দেওয়া হবে। আর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ সুবিধার প্রস্তুতি শেষে দ্রুত ২১ জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। এখন সবাইকে ফাইজারের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যে আট স্কুলে টিকাদান কর্মসূচি চলবে, সেগুলো হচ্ছে—মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজ, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মালিবাগের সাউথ পয়েন্ট স্কুল, গুলশানের চিটাগং গ্রামার স্কুল, মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ, ধানমণ্ডির কাকলী স্কুল, উত্তরার সাউথ ব্রিজ স্কুল এবং মিরপুরের স্কলাস্টিকা স্কুল।

এ স্কুলগুলোকে কেন নির্বাচন করা হলো, সে বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ফাইজার ভ্যাকসিনটা খুব টেম্পারেচার সেনসেটিভ। এ ভ্যাকসিনটি আমাদের যে কেন্দ্রে বা বুথে দিতে হয়, সে কেন্দ্রে বা বুথে প্রচুর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ লাগবে। কারণ, আমরা যে স্কুলগুলো নির্বাচন করতে যাচ্ছি; সে স্কুলে আমরা একসঙ্গে ২৫টি করে বুথ স্থাপন করতে যাচ্ছি। সোমবার (আজ) ঢাকা শহরের একটি স্কুল দিয়ে শুরু হবে এ কার্যক্রম। এবং পর্যায়ক্রমে আরও আটটি স্কুলে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমরা আশা করব, আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু করার।’

গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জের চারটি বিদ্যালয়ের ১২০ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হয়েছিল করোনার টিকা। কোনো সমস্যা না পাওয়ায় আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কর্মসূচি।

মূলত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকক্ষ ও যন্ত্রের সুবিধা না থাকায় সীমিত আকারে এ কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এ টিকা কার্যক্রম দেশের ২১ জেলায় দেওয়া হবে। তারপর ধীরে ধীরে সারা দেশে এ কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

এর আগে শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘১২ বছরের ঊর্ধ্বে যে শিক্ষার্থীরা আছে, সোমবার (আজ) থেকে আমরা তাদের টিকা কার্যক্রম শুরু করব। দেশের ২১টি জেলায় শিশুদের এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সুরক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন করে টিকা নিতে হয়েছে সবাইকে। সেখানে ১৮ বছরের কম বয়সীদের নিবন্ধন করার সুযোগ নেই।

তাহলে, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা টিকার নিবন্ধন কীভাবে করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, ‘প্রথমে স্কুল থেকে একটি তালিকা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আসতে হবে। মন্ত্রণালয় সেটা যাচাই-বাছাই করে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে দিয়ে দিবে। তারপর স্কুল কর্তৃপক্ষ বা অভিভাবক সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করবে। শিশু যেদিন টিকা নিবে, সেদিন সে তাকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও জন্ম সনদের ফটোকপি নিয়ে স্কুলে যেতে হবে।’

আপাতত প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে ফাইজারের এ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরবর্তীকালে দিনে ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।