২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়টি আ’লীগের ‘সাজানো নাটক’ : মির্জা ফখরুল

আপডেট: আগস্ট ২১, ২০২৩
0

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার বিচার প্রক্রিয়াটি সরকারের ‘সাজানো নাটক’ বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ বিচার কার্য্ক্রম তো শেষই করে ফেলেছে। কি বাকি আছে আর। ব্যাপার হচ্ছে যে, পুরো বিষয়টাই(বিচার প্রক্রিয়া) একেবারে আমি বলব যে, একটা সাজানো নাটক।”

কেনো সাজানো নাটক তার ব্যাখ্যা করে বিএনপি বলেন, ‘‘ কারণ, যেখানে মিটিং হওয়ার কথা ছিলো সেখা্নে মিটিং না হয়ে অন্য জায়গায় মিটিং শিফট করা হলো… এটা দেখভাল করার জন্য যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি তাদেরকে সেটা ইনফার্ম করা হয়নি।”

‘‘ তারেক রহমানের নাম এফআইআর-এ ছিলোই না, কখনোই ছিলো না। তিনবার আপনার এফআইআর হয়েছে তার মধ্যে একবারও তার ছিলো না। এরপরে একজন ব্যক্তি যিনি আগে রিটায়ার্ড করেছিলেন কাহার আখন্দ যিনি আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিলেন, তাকে নি্য়ে এসে পুনরায় চাকুরি দিয়ে তাকে এই মামলার আইও করা হলো। সেই ভদ্রলোক তখন তারেক রহমানের নাম সেখানে দিলেন।”

তিনি বলেন, ‘‘তারেক রহমানের কোথাও উচ্চারিত হয়নি পুরো ইনভেস্টিগেশনে। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হয়েছিলো প্রায় ১৪৫ দিন রিমান্ডে নেয়ার পরে এবং তিনি আবার সেটাকে কিন্তু অস্বীকার করে আবার এফিডিভেট দিয়েছিলেন… সেটাকে গ্রহন করা হয়নি।”

‘‘ আর তড়িঘড়ি করে যাতে সে কোর্টে গিয়ে কিছু বলতে না পারে অন্য একটা কেইসে ফাঁসির হুকুম হয়েছিলো তাকে ইতিমধ্যে ফাঁসি কার্য্কর করে তাকে আর কোর্টে আসার সুযোগই দেয়া হলো না। তাহলে এটাকে আমরা কি বলব?”

চার দলীয় জোট সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটাই নয় শুধু, আমার কাছে রেকর্ডস আছে। আমি সময় পেলে আমি আপনাদের দেখাব যে, এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানের নাম এখানে(এই মামলা) দেয়া হয়েছে, বিএনপির নেতাদের নাম এখানে দেয়া হয়েছে ।পুরোপুরি এবিষয়টা কোনো সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এই কাজটা করা হয়েছে।”

১২০১৮ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ৩০০ আহত হয়। এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পির্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড রায় দেয় বিচারিক আদালত।

‘২১ আগস্টের ঘটনার কনডেনেবল’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা বার বার বলে এসেছি যে একটা নিরপেক্ষ ‍সুষ্ঠু তদন্ত হোক। সেই নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়নি। আমরা ২১ আগস্টের ঘটনাকে কনডেম করি। এটা ডেফিনেটলি বাংলাদেশের রাজনীততে অন্যতম জঘন্য একটি ঘটনা এবং কনডেনেবল।”

তিনি বলেন, ‘‘ কিন্তু একই সঙ্গে সমগ্র মানুষের যে প্রত্যাশা সেটা হচ্ছে যে… এটা অযথা শুধু রাজনৈতিক কারণে রাজনৈতিক নেতাদের নাম দিয়ে সেখানে রাজনৈতিক ফয়দা লুটা হচ্ছে… এটা কেউ সমর্থন করতে পারে না।”

‘‘ আমরা আবারো বলছি, তারেক রহমান সাহেব, বিএনপির আবদুস সালাম পিন্টু বা লুতফুজ্জামান বাবর তারা কেউ এটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, রাজনৈতিক কারণে তাদেরকে জড়িত করা হয়েছে।”

আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি ঠিক করতে দল ও অঙ্গসংগঠনকে নিয়ে যৌথ সভায় বসেন বিএনপি মহাসচিব। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, মনির হোসেন, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি ছিলেন।

অঙ্গসংগঠনের মধ্যে যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, উলামা দলের শাহ নেসারুল হক, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, মতস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, শ্রমিক দলের মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জু, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমূখ ছিলেন।