আপডেট: মে ১৭, ২০২৩
0

ঘুষ নেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার ইউক্রেনের প্রধান বিচারপতি

ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ইউক্রেনের প্রধান বিচারপতি সেভেলোদ নায়াজিয়েভকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাজধানী কিয়েভে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করে দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরো অব ইউক্রেনের (এনএবিউ) জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা ওলেকসান্দর লেমেনকো।

পরে এনএবিইউর ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে সেভেলোদ নায়াজিয়েভের সরকারি বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালায় এনএবিইউ এবং দুর্নীতি সংক্রান্ত বিশেষ প্রসিকিউটর স্পেশাল অ্যান্টি-করাপশন প্রসিকিউটর (এসএপি) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সমন্বিত দল।

এনএবিইউর ফেসবুক পেজে আরো বলা হয়, ‘তল্লাশি অভিযানে তার বাড়ি থেকে ২৭ লাখ ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সেই অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এরপর তাকে গ্রেফতার করে। ওই অর্থও জব্দ করা হয়েছে।’

ওই পেজে আরো বলা হয়, সম্প্রতি বিচারবিভাগের দুর্নীতি দমনে মনযোগ দিয়েছে জাতীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও অন্তত ১৮ জন দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারপতি ও বিচারক আছেন সংস্থার গোপন তালিকায়। ধীরে ধীরে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা সেরহি লেশচেঙ্কো টেলিগ্রামে বলেছেন, ইউক্রেনীয় দুর্নীতি দমন ব্যুরো এবং বিশেষায়িত দুর্নীতিবিরোধী প্রসিকিউটরের কার্যালয় তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ ডলার ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পেয়েছে।

২০২১ সালের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন কেনিয়াজিয়েভ। এর আগে তিনি বিচারপতি ও আদালতের সচিব হিসেবে কাজ করেছেন।

দুর্নীতির দীর্ঘ ইতিহাস আছে ইউক্রেনের। ২০২১ সালে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) দেশটিকে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম’ বলে উল্লেখ করেছিল। দুর্নীতির বিচারে টিআই’র তালিকাভুক্ত ১৮০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ছিল ১২২তম।

গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য চেষ্টা করছে ইউক্রেন। ২০২২ সালে রুশ বাহিনী দেশটিতে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এ বিষয়ে ইউক্রেনের তদবির আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে ইইউয়ের তরফ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, এই সংস্থার সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন খাতে যে ব্যাপক দুর্নীতি— তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে কিয়েভকে।

ইইউ’র এই শর্তের পর দেশজুড়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।