শাহাদৎবার্ষিকীতে বাণী : শহীদ জিয়া বার বার জাতির ক্রান্তিকালে অবিস্মরণীয় নেতৃত্ব দিয়েছেন- মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মে ২৯, ২০২১
0

মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন , শহীদ জিয়া বার বার জাতির ক্রান্তিকালে অবিস্মরণীয় নেতৃত্ব দিয়েছেন। শহীদ জিয়ার প্রবর্তিত কালজ¦য়ী দর্শণ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ ও তাঁর অবিনাশী আদর্শ এদেশের মানুষকে উদ্দীপ্ত করে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে সুরক্ষার এবং উৎপাদন ও অগ্রগতি তরান্বিত করার।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বাণীতে এ মন্তব্য করেন।

“মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুণ:প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি, দুরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শহীদ জিয়ার প্রবর্তিত কালজ¦য়ী দর্শণ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ ও তাঁর অবিনাশী আদর্শ এদেশের মানুষকে উদ্দীপ্ত করে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে সুরক্ষার এবং উৎপাদন ও অগ্রগতি তরান্বিত করার।

জাতির ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব ছিল অবিস্মরণীয়। তিনি সকল সংকটে দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে বীরোচিত ভূমিকা এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তাঁর অনবদ্য অবদানের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রারম্ভে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক সেই মুহুর্তে ২৬শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উজ্জীবিত করেছে। এই ঘোষণায় দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ মরণপণ যুদ্ধে সামিল হয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষে জাতি বিদেশী শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে বিজয় অর্জনের অব্যবহিত পরে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর দুর্বিনীত দু:শাসনে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ও কাঙ্খিত গণতন্ত্র মাটিচাপা পড়ে। একের পর এক দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা হরণ করা হয়, দেশ একদলীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের নিষ্ঠূর কবলে পড়ে পিষ্ট হতে থাকে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়। সেই সময় দেশের সর্বত্র বিভৎস অরাজকতা নেমে আসে। গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে দেশের সিপাহী-জনতার মিলিত শক্তির মিছিলে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন। ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করেন। উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির অবস্থা থেকে খাদ্য রপ্তানীকারক দেশে পরিণত করেন। আধুনিক ও স্বনির্ভর দেশ গঠনের পদক্ষেপ নেন।

এই মহান জাতীয়তাবাদী নেতার জনপ্রিয়তা দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারিরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে যতই চেষ্টা করুক না কেন, তিনি বিস্মৃত হন নাই। বরং দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে আছেন, থাকবেন। জাতীয় জীবনের চলমান সংকটে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় ইস্পাতকঠিন গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বর্তমান সরকার দেশে একদলীয় শাসন পুণ:প্রতিষ্ঠা করেছে।

কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্মমতা চারিদিকে বিদ্যমান। বিরোধী দলের অধিকার, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করে বর্তমান সরকার। সেজন্য গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। এখনও তিনি কার্যত: বন্দী। অসুস্থ হয়ে তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন। তাঁর মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহার করে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
বাংলাদেশসহ বিশ^ব্যাপী চলছে অজ্ঞাত দানব করোনা মহামারির তান্ডব।

আমাদের সকলকে এ সম্পর্কে সচেতন থেকে করোনার হাত থেকে বাঁচতে আজ শহীদ জিয়ার শাহাদাতবার্ষিকীতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট পানাহ চাই।
রণাঙ্গনের অনন্য মুক্তিযোদ্ধা, নির্ভীক, নির্মোহ রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়ার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী শক্তির ক্রমাগত বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমণের পটভূমিতে তাঁর অম্লান স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে এবার ৩০ মে মহান নেতার শাহাদাতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করতে দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহসহ সকল স্তরের জনগণের প্রতি আমি উদ্বাত্ত আহবান জানাচ্ছি।