অপরিকল্পিত লকডাউনে মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন :অভাব-ক্ষুধার তাড়নায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে– মীর্জা ফখরুল

আপডেট: জুলাই ২০, ২০২১
0

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বানীতে বলেছেন অপরিকল্পিত লকডাউনে মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অভাব ও ক্ষুধার তাড়নায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে মানুষ ।
তিনি বলেন , “পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করি।’

আল্লাহ তায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হওয়াই কোরবানীর মর্মবানী। পশু কোরবানীর পাশাপাশি মনের পশু কোরবানী দিয়ে জীবন-যাপনে শ্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতি হওয়া আমাদের কর্তব্য। কোরবানীর সে শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে মানব কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।

দেশ এখন এক চরম দু:সময় অতিবাহিত করছে। করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যর্থতায় সারাদেশের মানুষ বিপর্যস্ত, অসুস্থতা ও ক্ষুধার জ¦ালায় হাহাকার করছে অসহায় মানুষ। অভাব ও ক্ষুধার তাড়নায় কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। অপরিকল্পিত লকডাউন ও সমন্বয়হীনতায় মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন।

মানুষের দিন কাটছে জীবন-মৃত্যুর অজানা আশংকায়। এর ওপর স্বেচ্ছাচারী শাসনের কবলে জনগণ অধিকারহীন ও বাকরুদ্ধ। অগণতান্ত্রিক শক্তির দানবীয় উত্থানে রাষ্ট্র ও সমাজে ভয় ও আতঙ্ক আধিপত্য বিস্তার করে আছে। অনির্বাচিত ভ্রুক্ষেপহীন সরকারদের জনগণের জন্য কোন দায়িত্ববোধ থাকে না। জনগণের সাথে মশকরা করাই যেন তাদের একমাত্র কর্মসূচি। সরকারের অপরিণামদর্শিতা এবং উদাসীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় করোনার চিকিৎসা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় কাতরাচ্ছে। অথচ সরকার নির্বিকার। বর্তমান সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নানা ধরণের প্রহসন ও নাটক প্রদর্শন করছে।

আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়ে আসছে। শ্রষ্টার প্রতি নি:স্বার্থ আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকি নিদর্শন হিসেবে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতি বছর পশু কোরবানী দেয়, এর মাধ্যমে মহান আল্লাহপাকের প্রতি নিবেদিত বান্দা হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কোরবানীর ঈদ বিশ^মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব।

যেকোন উৎসব বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য নয়, উৎসবের রয়েছে একটি সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য। উৎসব মানবজাতির এমন এক সাগর তীর যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সকলেই সামিল হতে পারে। তাই স্বার্থচিন্তা পরিহার করে মানব কল্যাণ এবং সমাজে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার ও সোহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। আসুন, আমরা অঙ্গীকার করি-এই ‘ত্যাগের উৎসবের’ দিনে করোনায় বিপন্ন মানুষসহ অসহায়-নিরন্ন মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার।
ঈদ-উল-আযহা সকলের জীবনকে করে তুলুক আনন্দময়, মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমি এ প্রার্থনা জানাই। ঈদ মোবারক।