বরগুনায় অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান প্রকল্পের অর্থ লোপাট, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ চেয়ারম্যান মনিরুলের বিরুদ্ধে  

আপডেট: মে ২৪, ২০২৩
0

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা :

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পে অর্থ কাজ না করিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের মোতালেব গাজী আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচী (ইজিপিপি) দুই প্রকল্পে ৬৬ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার কাজ দেয়। নীতিমালায় উল্লেখ আছে, দুই প্রকল্পে ১৩৯ জন হতদরিদ্রদের তালিকা করে। সে তালিকায় শ্রমিক দিয়ে কাজ সমাপ্ত করতে হবে এবং শ্রমিকদের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কাজের শ্রমিক মজুরী টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু স্থানীয় এ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি সরকারের এ নীতিমালা না মেনে তার আত্মীয় স্বজন,অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবি ও স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের দিয়ে তালিকা তৈরি করে নামমাত্র প্রকল্পের কাজ দায়সারা ভাবে করে মোবাইল সিম ( বিকাশ) নাম্বার নিজের কাছে রেখেই এসব প্রকল্পের অর্থ (টাকা) উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজের তালিকায় শ্রমিক হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তাদের অধিকাংশই অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবি, চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজন ও স্বচ্ছল ব্যাক্তি।

তালিকায় অন্তরভুক্ত শ্রমিক অবসরপ্রাপ্ত প্রকল্প তালিকায় সেনাবাহিনী সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম কেন থাকবে? আমি এ কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না এবং আমি কোন টাকাও উত্তোলন করিনি।

এ তালিকায় অর্ন্তভুক্ত কবির প্যাদা বলেন, আমি কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না। আর হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, স্থানীয় একটি প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক অভিযোগ দেন। আর এ দায়েরকৃত অভিযোগ সত্য নহে। আমি মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী শ্রমিক তালিকা দিয়েই সঠিক নিয়মে প্রকল্পের কাজ করেছি।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইন বলেন, ইউএনও স্যার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইজিপি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের লেখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তে অনিয়ম পেলে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গোলাম কিবরিয়া।
বরগুনা জেলা প্রতিনিধি।
তারিখ : ২৪.৫.২০২৩ খ্রি:।