দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরন কর্মসুচিতে বরকত উল্যা বুলুর ওপরে আ’লীগের হামলা: সাংবাদিক লাঞ্চিত

আপডেট: জুন ২, ২০২২
0

আজাদ ভুঁইয়া, স্টাফ রিপোর্টার :

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দু:স্থ অসহায়দের মাঝে বিএনপির খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দায়ীত্ব পালনকালে ৭১ টেলিভিশন এর নোয়াখালী প্রতিনিধি মিজানুর রহমানকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে ও তার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বুধবার দুুপুরে উপজেলার বাংলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

দিন ব্যাপী কর্মসূচীতে ছিল ফাতেহা পাঠ দোয়া আলোচনা সভা ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। আয়োজিত কর্মসূচীতে বিভিন্ন স্থানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস, পৌর বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহসিন, জেলা যুবদল সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল আজিম সুমন, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ওমর শরীফ মোঃ সানিয়ার, চৌমুহনী পৌর যুবদলের সভাপতি মোঃ লিটন, যুবদল নেতা বাহার, খোরশেদ প্রমূখ।

জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পূর্বনির্ধারিত কর্মসুচি অনুযায়ী চৌমুহনী পৌর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত কত উল্যা বুলুর উপস্থিতিতে বেগমগঞ্জের জমিদাহাটে তাদের প্রথম কর্মসূচি সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে পরে চৌমুহনী পূর্ব বাজার কাচারি মসজিদ ও চৌমুহনী রেল গেইটে খাবার বিতরণ করে। সেখানে ছাত্রলীগ যুবলীগ বাধা প্রদান করে। ওই সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফরণ ঘটায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মিরা। পরে বিএনপির নেতাকর্মিরা চৌরাস্তায় খাবার বিতরণ করে বাংলাবাজারে গেলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেয়া যু্বলীগ ছাত্রলীগের শষস্র ক্যাডাররা তাদের বাধা দেয়। এ সময় তারা লাঠি সোটা হাতে নিয়ে মিছিল করে ও বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে এবং বাড়ি ঘরে হামলা করে।

স্থানীয় সংবাদকর্মীগন জানান, বিএনপি যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বেগমগঞ্জের বাংলা বাজারে দু:স্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচী ছিলো। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যা বুলুর উপস্থিতে কর্মসূচীর আগমূহুর্তে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় ও বেশ কয়েকটি ককটেল বিষ্ফোরন ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে । হামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা চলে গেলেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা পাশ্ববর্তি দোকানপাট ও বাড়ীঘরে হামলা শুরু করে। হামলার ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহকালে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা সাংবাদিক মিজানুর রহমানের উপরও চড়াও হয়। এ সময় সদ্য ঘোষিত গোপালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক জাবেদ হোসেন রকি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি তুহিন নেতৃত্বে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা মিজানুর রহমানকে লাঞ্চিত করে এবং সাথে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তিতে উপজেলা যুবলীগের এক নেতার হস্তক্ষেপে তারা মোবাইলটি ফিরিয়ে দিলেও মোবাইল থেকে সব ছবি ও ভিডিওগুলো ডিলেট করে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

হামলার শিকার সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান, বিএনপির কর্মসূচীর খবর পেয়ে আমি সেখানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মসূচীতে হামলার পর তারা এলাকা থেকে চলে গেলেও হামলাকারীরা পাশ্ববর্তি দোকানপাট ও বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করে। আমি ছবি ও ভিডিও করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর চড়াও হয় এবং আমাকে লাঞ্চিত করে। আমি এ ঘটনার দোষিদের বিচার দাবী করছি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নোয়াখালীর সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেছেন।

এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যা ভুলু অভিযোগ করেন, শাসক দলের শষস্র ক্যাডাররা বিএনপির পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে লুট করে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তিনি এ ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। মূল ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান তিনি।
#