কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে ৭ খুন মামলার ফাঁসির আসামির নূর হোসেনের মোবাইল ফোন ব্যবহার : তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কনডেম সেলে বসেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির আসামির নূর হোসেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
গত ৬ জানুয়ারি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার আব্দুল জলিল এ কমিটি গঠন করেন। কমিটির সভাপতি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর উপ-তও¦াবধায়ক ও জেলার উম্মে সালমা, সদস্য সচিব ডেপুটি জেলার নুরুল মবিন এবং সদস্য প্রধান কারারক্ষী মো. আসাদুজ্জামান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার আব্দুল জলিল এ প্রতিবেদককে জানান, এ কারাগারের কনডেম সেলে নূর হোসেনসহ তিনজন বন্দি রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির আসামি নূর হোসেন। কারা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে নূর হোসেন কনডেম সেলে বসে গোপনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। পরে ওই কনডেম সেলে গত ৫ জানুয়ারি অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই কনডেম সেল থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সাত খুন মামলায় নূর হোসেন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
জেল সুপার আরও জানান, কারাগারে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপরাধে তার বিরুদ্ধে কারাবিধি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ দিনের (১১ জানুয়ারির মধ্যে) মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারী ‘হ্যালো, জেল থেকে আমি নূর হোসেন বলছি।’ ফোনে নূর হোসেনের নাম শুনে প্রথমে ভড়কে যান মুররুব্ব (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)। আসলেই কি নূর হোসেন? নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না! মুরুব্বি মনে মনে ভাবছিলেন, তার তো এখন কারাগারের কনডেম সেলে থাকার কথা, তাহলে কোথা থেকে ফোনে কথা বলছেন। নিজেকে সামলে, ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা কণ্ঠটি নূর হোসেনের নিশ্চিত হয়েই মনোযোগী শ্রোতা বনে যান তিনি। নূর হোসেন হুঙ্কার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘শোনেন, আপনারা আমার ভাই নূর উদ্দিনকে পাস করান। টাকা-পয়সা যা লাগে নেন, কিন্তু নূর উদ্দিনকে পাস করান। যদি না করান তাইলে আমি ২০২৩ সালে জেল থেকে মুক্তি পাইতাছি। তখন কিন্তু কাউরে ছাড়ূম না। যা করার করমু।’ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দুটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভাই-ভাতিজাকে জেতাতে কারাগারের কনডেম সেলে বসেই মোবাইল ফোনে বয়োজ্যেষ্ঠদের এভাবেই তালিম দিয়ে যাচ্ছেন এই কয়েদি। আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নাসিক নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন নূর হোসেনের ছোট ভাই নূর উদ্দিন আর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভাতিজা শাহ জালাল বাদল। দু’জনার প্রতীকই ঠেলাগাড়ি। ভোটের মাঠে তাদের দু’জনের পক্ষে নামতেই এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠদের খুঁজে খুঁজে বের করে এমন বাক্যবাণে ভীতি ছড়াচ্ছেন।

এম আর কামাল
নারায়ণগঞ্জ
তারিখ ঃ ০৭-০১-২০২২