আত্মস্বীকৃত খুনি আ’লীগ গণতন্ত্রকেও হত্যা করেছে: রিজভী

আপডেট: ডিসেম্বর ২২, ২০২১
0

আওয়ামী লীগ বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের আত্নস্বীকৃত খুনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, যে সরকারের মন্ত্রীরা বিচারবর্হিতভূত হত্যাকাণ্ডকে স্বীকৃত দেয়, তারা কি গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে? তারা নিশীরাতের ভোট করে গণতন্ত্রকেও বিচারবর্হিভূতভাবে হত্যা করেছে।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল এবং ‘অগ্নিঝরা মতিহার ও রিজভী আহমেদ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (রুনেসা) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রুনেসার সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার।

রিজভী বলেন, আজকে আপনারা দেখেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট র‌্যাব এবং তাদের কয়েকজন ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই যে নিষিদ্ধ ঘোষণা তারপরও কি এদের কোন বোধদয় হয়েছে? তারপরও তারা একই কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল গভীর রাত্রে মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জমজম ভূইয়াকে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে এখন আবার অস্বীকার করছে। গুম হচ্ছে আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট। এর বাইরে এদের ভাল কোন ঐতিহ্য নেই।

‘১৯৮৪ সালের এই দিনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৮৪ সালের ২২ ডিসেম্বর আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু পরদিন ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদে বলা হয় যে মারা যাননি বরং মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ২২ ডিসেম্বর আমার জীবনে একটি ঐতিহাসিক রক্তঝরা দিন।’

রিজভী বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের মন ভালো নেই। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু নেত্রী নন। তিনি ভীষণ অসুস্থ। তার মুক্তির জন্য আমাদের এই মুহূর্তে রাজপথে নেমে আসা উচিত। যার বক্তব্যে আমরা উজ্জীবিত হতাম, যেই নেত্রী কখনো নির্বাচনে পরাজিত হননি, অন্যায়ের সাথে কখনো আপোস করেননি। সেই নেত্রীকে তিলে তিলে শেষ করে দেশে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বানানো হচ্ছে, এই সরকারের আসল লক্ষ্য। এজন্যই ছলে-বলে কৌশলে খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে। সেই কারণে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য সব আয়োজন করা হয়েছে।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, আজকের জবরদখলকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যার কোন নীতি নেই,এথিক্স নেই, রাজনীতি নেই, এমনকি দেশপ্রেমও নেই। তার প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে স্ববিরোধীতা ওয়াদা ভঙ্গ করা। তার কাছে গণতন্ত্র কি? মত প্রকাশের স্বাধীনতা কি? তার কাছে কোন কিছুরই দাম নেই। আর বেগম জিয়া হচ্ছেন আলোর যাত্রী। বেগম জিয়া হচ্ছেন গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি। আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হচ্ছে গণতন্ত্র বিরোধী।

রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীনরা মুনাফেক। তারা এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিলেও পরে এরশাদের সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়ে টাকার ভাগ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। তারাই তো মুনাফেক। অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন। আর আওয়ামী লীগ হচ্ছে অন্ধকার পথের যাত্রী।

রুনেসার সেক্রেটারি মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কেন্দ্রীয় নেতা রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, রুনেসার নেতা মাহবুবুল আলম ফরহাদ, আনোয়ারুল ইসলাম আনু, নূরুজ্জামান তপন, রফিকুল ইসলাম মন্টু, ইউসুফ আলী মোল্লা, মতিউর রহমান মতি, কাজী খাইরুল্লাহ শিপন, মাহমুদুল হাসান মিলন প্রমুখ।