আদর্শ পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে লেখক-সাংবাদিকদের করণীয় রয়েছে: আল্লামা বাবুনগরী

আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২১
0

হেফাজতে ইসলামের আমীর ও দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, শক্তিশালী দেশ গঠন ও আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে লেখক-সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে।

এ জন্য দরকার দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও পৃষ্ঠপোষকতা। সাংবাদিকগণ চাইলে দেশ ও জাতির জন্য উপকারী খবরগুলো ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে যেমন তরুণ ও যুবসমাজকে সহজেই উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, তেমনি নেতিবাচক খবরগুলো নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবেশন করে নিরুৎসাহিত করতে পারেন। এতে মনের অবচেতনেই মানুষের ভাল’র প্রতি উৎসাহবোধ এবং নেতিবাচক বিষয় থেকে দূরে থাকার মানসিকতা গড়ে ওঠতে সহায়ক হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন ইসলামী পত্রিকা (১৯৩৫ইং থেকে প্রকাশিত) “মাসিক মু্ঈনুল ইসলাম” কার্যালয়ে হেফাজত আমির ও দারুল উলূম হাটহাজারি মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরি এসব কথা বলেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- প্রখ্যাত ইসলামী আইনবিদএবং দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, মাসিক মুঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা মুনির আহমদ, দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি আবু সাঈদ এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাওলানা আব্দুস সবুর প্রমুূখ।

আল্লামা বাবুনগরী এ সময় মাসিক মুঈনুল ইসলামের ব্যাবপস্থাপনা ও প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ওয়েব সাইটের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী মাসিক মুঈনুল ইসলামের কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো আমাদের দেশেও পাশ্চাত্য পুঁজিবাদিরা আমাদের চিরাচরিত পরিবার ও সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে দিতে বহুমুখী গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কোন রাখঢাক ছাড়াই আমাদের শিক্ষা, সাংস্কৃতি ও গণমাধ্যমে অনুপ্রবেশ করে তরুণ সমাজকে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদি চিন্তায় প্ররোচিত করছে। এতে আমাদের সমাজিক অনুশাসন ও পরিবার ব্যবস্থা যেমন দিন দিন হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে, তেমনি তরুণ সমাজ বিভ্রান্ত হয়ে আদর্শচ্যুত হওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এটা জাতির জন্য ভয়াবহ অশনী সংকেত। এ পর্যায়ে লেখক ও সাংবাদিক সমাজের জাতীয় স্বার্থে অনেক করণীয় রয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণ ও আদর্শ দেশ এবং জাতি গঠনের লক্ষ্যে নৈতিক, আদর্শিক ও মানবিক বিষয়াবলীর প্রতি উৎসাহব্যঞ্জকে খবরসমূহ এবং প্রতিবেদন তৈরি করে প্রকাশ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, ইসলাম মানবিকতাবোধের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যে কারণে পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়ার প্রতি হাদীসে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জামাতে নামায আদায়, জুমা আদায়, ঈদ উদযাপন, দান-সদক্বা, ফিতরা, বিয়ে-শাদীতে বংশ ও সমমর্যাদা রক্ষা, অসুস্থ ও বিপদগ্রস্থের প্রতি সহযোগিতা দানে গুরুত্বারোপে শক্তিশালী সমাজ গড়ার অন্তর্নিহীত উদ্দেশ্যে রয়েছে । কারণ, পরিবার ও সমাজব্যবস্থা শক্তিশালী হলে অনেক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এমনিতেই রোধ হয়ে যায়। কারণ, শুধু প্রশাসনের একার পক্ষে সব অপরাধ রোধ করে শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়া সম্ভব নয়। এ জন্য পরিবার ও সমাজ থেকে যেমন যথেষ্ট সহযোগিতা লাগবে, তেমনি তরুণ ও কিশোরদের মননে নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা আত্মস্থ করাতে হবে।
image.png