আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে স্বৈরশাসককে পরাস্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হোন— তারেক রহমান

আপডেট: জুন ২৫, ২০২২
0

আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে স্বৈরশাসককে পরাস্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে এ মন্তব্য করেন। বাণীটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষর করে গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।

বাণীতে তারেক রহমান বলেছেন, “২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসটি বাংলাদেশসহ বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে জাতিসমূহ স্বাধীনতা অর্জন করলেও আজও বিশ্বব্যাপী চলছে নানাভাবে রক্তাক্ত সংঘাত। আর এই সংঘাত ও বিরোধের কারনেই সাধারণ মানুষেরা দেশে দেশে নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর কারণে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাযন্ত্রণা ভোগ করছে বিরোধী মতের অসংখ্য মানুষ।

এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই নির্যাতনের সবচেয়ে বড় যন্ত্র। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অথচ রাষ্ট্রের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মানুষ নানাভাবে হয়রানী হচ্ছে। সারা বিশ্ব আজ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশীদুর এগুতে পারেনি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন বন্দী, এখানে ভয়াবহ দূঃশাসন চলছে। বাংলাদেশে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী সংবিধানকে পদদলিত করে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে। বন্দুক যুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অসংখ্য সাংবাদিককে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়াও মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য একের পর এক সংবাদপত্র, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে বিরোধীদের কণ্ঠ শোনা না যায়। আর এই ধারাবাহিকতায় এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ, অথচ প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার তাঁকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।

বাংলাদেশে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিঞ্চু আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেই লেলিয়ে দেয়া হয় তাদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ছোবলে গণতন্ত্রকে করা হয়েছে দেশছাড়া। বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসকে দমন করার জন্য সরকার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে।

একমাত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থাকে গুঁড়িয়ে দিতে সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। করোনা ভাইরাসের মহাসংকটকালেও অবৈধ শাসকগোষ্ঠী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষাার্থে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে-কারণ বিরোধী শক্তি যেন সরকারের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া না দিতে পারে।

আমি তাই জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী মহল ও স্বৈরশাসককে পরাস্ত করা সম্ভব।