আমার দেশ ও সত্য প্রকাশে অদম্য সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২৩
0


অলিঊল্লাহ নোমান

আমার দেশ পত্রিকা আর্থিক সঙ্কটে। সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারিদের বেতন-ভাতা বন্ধ। ১/১১-এর জরুরী আইনের সরকার ক্ষমতায়। এই সঙ্কট কাটবে কি না, এনিয়ে নানা সংশয়। পত্রিকাটির মালিক কতৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার নানা ফন্দি করেছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতিশীল, এবং পেশার প্রতি অনুগত একদল সংবাদ কর্মীর নিরলস পরিশ্রমে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত থাকে। নানা ঘটনার মধ্যে পত্রিকাটির সাংবাদিকরাই দায়িত্ব নেয় প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেবেন। শুরু হয় আয়-ব্যায়ের হিসান-নিকাশ। দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস পর অর্ধেক মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হয় পত্রিকার আয় থেকে। এর মাঝেই প্রতিষ্ঠানের মালিক কতৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছিলেন তারা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বিক্রি করে দেবেন। পত্রিকাটি চালিয়ে নেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের মধ্যে গঠিত কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করা হয় মালিকদের পক্ষ থেকে। শুরু হয় ক্রেতা খোঁজাখুজি।

এসময় পত্রিকাটির চালিয়ে নেওয়ার মূল দায়িত্বে ছিলেন বিবিসি খ্যাত প্রবীন সাংবাদিক আতাউস সামাদ। তাঁর নেতৃত্বই সাহস জুগিয়েছিল অন্যদের। প্রতিষ্ঠান কেনার জন্য অনেক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু নানা শর্তের বেড়াজাল। এতে পত্রিকাটি চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্বে থাকা সাংবাদিকদের আপত্তি। মূল দায়িত্বে থাকা আতাউস সামাদ একদিন সাবেক জ্বালানী উপদেষ্টা প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানকে পত্রিকাটির দূরাবস্থার কথা জানালেন। ততদিনে বকেয়া বেতন ১২ মাসের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ৪ শতাধিক মানুষ এখানে কাজ করেন। ৪ শতাধিক সংসার চলছে আর্থিক সঙ্কটে। শ্রদ্ধেয় আতাউস সামাদ সাবেক জ্বালানী উপদেষ্টা ও বেসকারি শিল্প উদ্যোক্তা মাহমুদুর রহমানকে অনুরোধ জানান পত্রিকাটির দায়িত্ব নিতে। এতে ৪ শতাধিক সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারির সংসার আর্থিক সঙ্কট থেকে রেহাই পাবে।
জনাব শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান ততদিনে লেখালেখি শুরু করেছিলেন। ১/১১-এর জরুরী আইনের সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। তাঁর কলমেই প্রথম এই জরুরী আইনের সরকারের অনিয়ম ও সংবিধান লঙ্ঘনের বিষয় গুলো উঠে আসতে শুরু করে। নয়া দিগন্তের নিয়মিত লেখক ছিলেন তিনি।

শ্রদ্ধেয় আতাউস সামাদের অনুরোধে সায় দিলেন। পত্রিকাটির মালিকানা কিনে নিতে সম্মতি জানালেন। প্রতিষ্ঠাতা মালিক কতৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ৪ শতাধিক পরিবার আলোর রেখা দেখতে পায়। ২০০৮ সালের জুলাই মাস। প্রথম সপ্তাহে মালিকানা হস্তান্তর হয়। শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান তাঁর অন্য সঙ্গীদের নিয়ে পত্রিকা অফিসে আসলেন। আমার দেশ পাবলিকেশন্স কোম্পানীর মালিকানা ক্রয়ের সময়আরো ৪ জন পরিচালক নিয়েছিলেন সঙ্গে। তাদেরসহ পত্রিকা অফিসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললনে। আমার দেশ অফিসের ফ্লোরে আমরা সবাই দাড়িয়েছিলাম। তিনি বাকী চার পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সামনে দাড়ালেন। সংক্ষিপ্ত একটি বক্তব্য দিলেন। শেষে জানালেন, তিনি যতদিন পত্রিকাটির দায়িত্বে থাকবেন ততদিন মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

যে কথা সেই কাজ। জুলাই মাসের শুরুতেই আমরা এক মাসের বেতন পেলাম। এক বছরের বেশি সময় পর এক মাসের বেতন একসঙ্গে পেয়েছে সবাই। পত্রিকাটিতে কর্মরত সকলের মুখে আবার হাসি ফুটল। পত্রিকাটি বেঁচে থাকবে এবং ভালভাবে আগের মতই এগিয়ে যাবে সেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করি আমরা।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান আরেকটি ঘোষণা দিয়েছিলেন। কর্মরত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, কোন সত্য ঘটনা আড়াল করা যাবে না। দুর্নীতি, দু:শাসনের বিরুদ্ধে সত্য প্রকাশে অনঢ় থাকতে হবে। তবে অবশ্যই সংবাদের পক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমান হাতে রাখতে হবে। যেমন ঘোষণা তেমন কাজ। একের পর এক সত্য প্রকাশ হতে থাকল। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে তিনি নিজেও প্রতি সপ্তাহে বিশেষ মন্তব্য প্রতিবেদন লিখতে শুরু করলেন।
ধীরে ধীরে আমার দেশ-এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সত্য প্রকাশে অদম্য সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপরও চাপ আসতে থাকতে নানা দিক থেকে। তিনি চাপে নত হওয়ার মত মানুষ নন। একদিন সন্ধ্যায় পত্রিকা অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে তেজগাঁও সাত রাস্তার মোড়ে গাড়ি হামলা করা হয়। হাতুড়ি দিয়ে হামলা চালিয়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে ফেলা হয় সেদিন। আল্লাহ’র রহমতে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।

২০০৯ সালের ৯ নভেম্বর মাসে প্রথম মামলা হয় আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে। বিটিআরসিতে ৪ ভরতীয় নাগরিক উচ্চ পদে চাকুরি করতেন। তাদের চাকুরির বিভিন্ন ডকুমেন্টস আমার হাতে আসে। সেটা একটি প্রতিবেদন লিখি। সম্পাদক মহোদয় শিরোণাম ঠিক করলেন-ভারতীয় কব্জায় বিটিআরসি। প্রতিবেদনটি প্রকাশের সপ্তাহের মধ্যেই বিটিআরসি মানহানিার মামলা দায়ের করে। মামলার আসামী হিসাবে সম্পাদক, প্রতিবেদক ও প্রকাশক। আমরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেই।

পরের মাসেই শেখ হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আমার দেশ। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুরু হয় মামলার হিড়িক। দুই দিনের মাথায় ২৫ জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে মাগুড়ার একটি আদালত মামলার গ্রহন করে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে দেয়। যদিও এধরনের মানহানি মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যুর রেওয়াজ নেই। বিবাদীদের সমন দেওয়া হয় আইন ও প্রচলিত বিচারিক রীতি অনুযায়ী। কিন্তু মাগুড়ার অতি উৎসাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়ারেন্ট ইস্যু করে দিলেন। ২৫ জেলায় মামলার মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল কক্সবাজারের একজন ম্যাজিষ্ট্রেট। তাঁর আদালতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মামলা করতে গেলে সেটা গ্রহন করেননি। আইন ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের নজির উল্লেখ করে তিনি মামলাটি প্রত্যাখান করে আদেশ দেন। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ছাড়া মামলা করার কোন সুযোগ আইনে নেই সেটা তিনি জানিয়ে দেন আদেশে। অথচ, বাকী ২৫ জেলায় ম্যাজিষ্ট্রেটরা সেই আইন অনুসরণ করেননি।
একই ঘটনায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ছাড়া ২৫টি মামলা হতে পারে কি না, এই প্রশ্নে হাইকোর্টে রীট আবেদন করা হল আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে। হাইকোর্ট কারণ দর্শানোর রুল জারি করে এবং ২৫ জেলায় মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। এতে তাৎক্ষণিক ঝড় থেমে যায়। কিন্তু শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র থামেনি।
মামলা, হামলা দিয়ে আমার দেশ-এ সত্য প্রকাশ থামনো যাচ্ছে না। শেখ হাসিনার দুর্নীতি ও দু:শাসনের চিত্র উঠে আসছে মানুষের সামনে। শেখ হাসিনার অনুগত অন্য গণমাধ্যম গুলো বেকায়দায়। তারা শেখ হাসিনার গুণকীর্তনে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। আমার দেশ মানুষের সামনে সত্য প্রকাশ করে দিচ্ছে। যে সত্য তারা আড়াল করে শেখ হাসিনার গুণকীর্তন করতে চায় সেটা প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। আমার দেশ-এর জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে।

সরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়ে আমার দেশকে আর্থিক সঙ্কটে ফেলার চক্রান্ত কর সরকার। একই সাথে বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান গুলোকেও নানাভাবে বারণ করা হয়। আর্থিক সঙ্কট কাটাতে অন্যান্য পত্রিকার চেয়ে আমার দেশ-এর দাম বাড়ানো হয় দুই টাকা বেশি। অন্য পত্রিকা ৩০ পৃষ্ঠা রঙ্গি ছাপা কাগজে দাম ৫ টাকা। আমার দেশ মাত্র ১৬পৃষ্ঠা, দাম ৭ টাকা। তাতেও আমার দেশ-এর জনপ্রিয়তা কমেনি। বরং চাহিদা আরো বাড়তে থাকে। পাঠকের আগ্রহ দেখে অনেকেই বষ্মিত হয় তখন। কোনভাবে আমার দেশকে দমাতে না পেরে শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। ২০১০ সালের ৩০ মে। দিনটা ছিল আমার দেশ-এর জন্য একটি দু:স্বপ্নে। সকালেই খবর ছড়িয়ে পড়ে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পত্রিকাটির প্রকাশক হাসমত আলীকে উঠিয়ে নিয়ে যায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই। হাসমত আলী ছিলেন পত্রিকাটির প্রথম উদ্যোক্তা প্রকাশক। তারা বিক্রি করে দিলেও জেলা প্রশাসক বেআইনিভাবে প্রকাশক হিসাবে মাহমুদুর রহমানের নামটির ছাড়পত্র দেয়নি। প্রকাশক বদলের আবেদন করা হলে, হাসমত আলীকে অব্যাহতি দেয় জেলা প্রশাসক। কিন্তু তাঁর স্থলে নতুন প্রকাশক হিসাবে মাহমুদুর রহমানের নামে ছাড়পত্র দেওয়া থেকে বিরত থাকে জেলা প্রশাসন। এক পর্যায়ে হাসমত আলীর নিকট থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় এনএসআই। এই কাগজে মামলা দিয়ে বলা হয় অন্যায়ভাবে প্রকাশকের জায়গায় হাসমত আলীর নাম ছাপা হচ্ছে। এই অজুহাতে ৩০ মে রাত ৮টার পর আমার দেশ-এর ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসক।
এখানেই শেষ নয়। সন্ধ্যার পরপরই পুলিশ আমার দেশ কার্যালয় ঘেরাও করে। রাতভর পুলিশের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ভোরে আমার দেশ কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সম্পাদককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরআগে রাতে প্রত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করে ছাপাখানা দখলে নেয়।

শুরু হয় একের পর এক ভূযা মামলায় সম্পাদককে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন। আইনি লড়াইয়ে দেড় মাস পর আমার দেশ প্রকাশনা অনুমতি পায় উচ্চ আদালত থেকে। তবে সম্পাদককে কারাগারে আটক রাখা হয়। এই অবস্থায় সুপ্রিমকোর্ট আদালত অবমাননার একটি মামলায় ৬ মাসের কারাদন্ড দেয় সম্পাদককে। একই সাথে প্রতিবেদক হিসাবে আমাকেও (অলিউল্লাহ নোমান) একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই জেল জুলুমেও আমার দেশ-এর সত্য প্রকাশ অব্যাহত থাকে। দীর্ঘ ৯ মাস ১৯ দিন পর আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তখন কারাগার থেকে মুক্তি পান।

মুক্তি পেয়ে আবারো তিনি যথারীতি সম্পদকীয় মন্তব্য প্রতিবেদন লেখা শুরু করেন। আমার দেশ একের পর এক রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, গুম, খুনের প্রতিবেদন প্রকাশ অব্যাহত রাখে। বিচার বিভাগের দলীয়করণ থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে আমার দেশ প্রতিবেদন প্রকাশ অব্যাহত রাখে। এতে পাঠক চাহিদা অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকে। পর্যায়ক্রমে পত্রিকাটির দাম ১২ টাকা করা হয়। তাতেও পাঠক চাহিদা কমেনি। বরং বেড়েই চলেছিল।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাস। ৯ ডিসেম্বর প্রথম প্রকাশ করা হয় স্কাইপ স্ক্যাণ্ডাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিজামুল হন নাসিমের কথোপকথন হুবহু প্রকাশ শুরু করে আমার দেশ। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছিল। ১৩ ডিসেম্বর বিকালে আওয়ামী ক্যাডার খ্যাত শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আদালত থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। স্কাইপ স্ক্যাণ্ডাল প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় এতে। এদিনই ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করা হয়। এতে আমার দেশ সম্পাদক অফিসেই অবস্থান শুরু করেন। ১৭ ডিসেম্বর তিনি আমাকে লন্ডন পাঠিয়ে দেন। লন্ডন পৌছার পর ফোন করলে তিনি একটা কথাই বলেছিলেন, “তোমাকে সেইফ করতে পেরেছি। এখন আমার আর কোন চিন্তা নাই।” পরবর্তীতে ১১ এপ্রিল তিনি পত্রিকা অফিস থেকে দ্বিতীয়বারের মত গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেদিনই সরকার জোর করে আমার দেশ-এর ছাপাখানা আবারো দখলে নেয়। এখনো ফ্যাসিবাদের দখলে আমার দেশ-এর ছাপাখানা। এতে বেকার হয়েছেন আমার দেশ-এর ৪ শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারি।

তিনি হলেন এমন সম্পাদক, যিনি নিজের জীবন ঝুকিতে রেখে সহকর্মীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করেছেন। বেসরকারি শিল্পে তাঁর সফলতা অসীম। কিন্তু সংবাদপত্র জগতে এসেও তিনি ঝড় তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। অতি অল্প সময়ে পরিচিতি লাভ করেছেন দেশের সেরা সম্পাদক হিসাবে। মেধা, সততা দিয়ে বেসরকারি শিল্পের আয়ে আরাম আয়েশে যিনি জীবন কাটাতে পারতেন, সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে দুই দফায় গ্রেফতার হয়ে ৪৩ দিনের রিমাণ্ড মোকাবিলা করেছেন। প্রায় ৫ বছর কারাভোগ করতে হয়েছে তাঁকে বিনা বিচারে। তাঁর বিরুদ্ধে এখন মামলার সংখ্যা ১২৫-এর উপরে।

একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে কুষ্টিয়ার আদালতে আওয়ামী হায়েনাদের হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছিলেন। সেদিন হয়ত: নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুর মত রাজপথে আওয়ামী হায়েনার হামলায় প্রাণ দিতে হত। আল্লাহর অসীম রহমতে সেদিন ঢাকায় ফিরতে সক্ষম হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে নির্বাসিত জীবনে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। নির্বাসিত জীবনেও থেকে নেই। যুক্তরাজ্য থেকে অনলাইনে আমার দেশ প্রকাশনায় সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে যুক্তরাজ্য থেকে আমার দেশ-এর অনলাইন সংস্করণ প্রকাশ হচ্ছে তাঁর সম্পাদনায়।
অদম্য সাহসী, সত্য প্রকাশে নির্ভিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের আজ জন্মবার্ষিকী। আল্লাহ তাঁকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করুন। বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইকে এগিয়ে নিতে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টাকে আল্লাহ কবুল করুণ।


লেখক: যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত