ইশরাক, মিয়ান আরেফি ও হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২৩
0

ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলনকারী মিয়ান আরেফির বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।

মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে ওই মামলা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ওসি মো. সালাহউদ্দীন মিয়া।

বাদী আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করে। ওই দিন বেলা সাড়ে ১২ টা দিকে বিক্ষুদ্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাই মোড় থেকর আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশেরর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বেলা ৩ টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষনা করেন।

এজাহারে বাদী বলেন, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে আসামি মিয়ান আরেফি, হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মীসহ কিছু সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে ১ নং আসামি মিয়ান আরেফি নিজেকে যিক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় প্রদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে ১ নং আসামি মিয়ান আরেফি বক্তব্যে দাবি করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এই আসামি আরও দাবি করেন যে, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন যে, ২ নং আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নং আসামি ইশরাক হোসেন তাকে (১ নং আসামিকে) মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগ্রিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উস্কানি দেন। ১ নং আসামি অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।

এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনেে এক পর্যায়ে ১ নং আসামির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইন শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।

বাদী অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করেছেন।

উল্লখ্য, আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফির প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি। তার জন্ম ও বেড়ে উঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্য দেয়ার পর রোববার বিকেলে তিনি দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটকসকরে ডিবি পুলিশের হাতে দিয়েছে। এরইমধ্যে তিনি ডিবির কাছে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে কর্মকর্তারা বলছেন। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা তথ্য বেরিয়ে আসল।