মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী কারামুক্ত

আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২৩
0
ফাইল ফটো

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর \ বিতর্কিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী (২৮) কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। ওই কারাগারের জেল সুপার আমিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এর জেল সুপার আমিরুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ভোররাতে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করে র‍্যাব-১ এর সদস্যরা। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা সহ ঢাকার তেজগাঁও ও মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে আরো একটি মামলা করা হয়। আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চার মামলাসহ সব কয়টি মামলায় তাকে জামিন প্রদান করেন। আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌছলে তা যাচাই বাছাই শেষে শনিবার রাত ৮টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কাশিমপুর কারা ফটক থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে তার খালাতো ভাই আমিনুল হাসান পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করেন। এসময় আমিনুল হাসান বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে নিতে আমি কারাগারে এসেছি। কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর তাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবো।

‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বিভিন্ন মাহফিলে রাষ্ট্র তথা সরকার বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানী ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করেন। যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। রফিকুল ইসলাম মাদানীর উস্কানীমূলক বক্তব্যের কারনে তার অনুসারীরা গত ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন করা, জনমনে আতংক সৃষ্টি, সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানো, আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট করা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতাসহ সরকারের প্রতি ঘৃণারভাব সৃষ্টি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে দেশের সরল ও ধর্মানুরাগী মানুষের ধর্মীয় মুল্যবোধ ও ধর্মী অনুভুতিতে আঘাত করে বক্তব্য প্রদান করেন, যা ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাড়িয়ালী এলাকাস্থিত নিজের ‘মারকাজুল নূর আল ইসলামিয়া মাদরাসায়’ বসে দেশদ্রোহ ও সরকার বিরোধী কার্যকলাপ এবং নাশকতা কর্মকান্ড ঘটানোর পরিকল্পনা করতেন। তিনি সরাসরি সশস্ত্র জিহাদের ডাক দেন, এবং এক্ষুনি জিহাদের উপযুক্ত সময় বলে সবাইকে জিহাদে অংশ নেওয়ার আহবান জানিয়ে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে উস্কানির ভিডিও চিত্র ফেসবুক, ইন্টারনেট ও ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেল ও পেজে আপলোডের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া আটককালে রফিকুল ইসলাম মাদানীর কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এছাড়াও জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া গেছে। এসব এডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়েছে।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।
০৪/১১/২০২৩ ইং।