কুড়িগ্রামে আবাসন প্রকল্পে কিশোর-কিশোরীর প্রেমের সম্পর্কে দ্বন্দ্ব মিটাতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খুন, আটক-১০

আপডেট: মার্চ ১১, ২০২২
0

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নে ধরলা আবাসন প্রকল্পে দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে গিয়ে প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খুনের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর নওয়াবশ গ্রামের ধরলা আবাসন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই বকুল মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো.শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেনআটককৃতরা হলো, মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে মোরশেদুল হক (৪২), মোরশেদুল হকের ছেলে জাহিদ হাসান (২০), মোরশেদুল হকের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩৭)। এরা সবাই কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের নওয়াবস আবাসন প্রকল্প গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়াও জেলা সদরের সওদাগর পাড়া গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে রওশন ইসলাম (২৫), আকিরুজ্জামানের ছেলে রাশিদুল ইসলাম (৪৪), মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে মনিরুল ইসলাম ওরফে ময়নুল (২৬)আকিরুজ্জামানের ছেলে রানা ইসলাম (২৬), মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে হানিআহমেদ (৫৩), মৃত মোজাম্মেল হকের স্ত্রী মদিনা বেগম (৬৫) ও হানিফ মিয়ার স্ত্রী রোজী বেগম (৪২)।
নিহত ব্যক্তির নাম বকুল মিয়া (৩৮)। তিনি উত্তর নওয়াবশ গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তারের ছেলে। তার ঘরে দুই স্ত্রী ও তিন মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ধরলা আবাসন প্রকল্পের ১০ নং ঘরের সুবিধাভোগী মোরশেদের বারো বছর বয়সী মেয়ের সাথে ১১ নং ঘরের সুবিধাভোগী রাশেদার ছেলে রাশেদুলের (১৫) প্রেমের সম্পর্কের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত হয়। পরে সন্ধ্যায় বিষয়টি মিমাংসার সময় নির্ধারণ করেন স্থানীয়রা। এর মধ্যে মোরশেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধরলা ব্রিজের পূর্বপাড়ের সওদাগর পাড়া (সান্ডার পাড়া) থেকে একাধিক অটোরিকসায় করে বেশ কিছু লোকজন নিয়ে আবাসন প্রকল্পে প্রবেশ করে। দুই পরিবারের বিবাদ নিরসনে আবাসনের পাশের বাসিন্দা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বকুল মিয়া মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে মোরশেদের পক্ষের লোকজনের মধ্য থেকে এক যুবক আকস্মিক বকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় বকুল মিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আবাসন প্রকল্প এলাকার এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোরশেদ ও তার স্ত্রী চুরি ফিতা ফেরি করেন। তারা আগে সান্ডার পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। সেখান থেকে আনা লোকদের মধ্য থেকে কেউ একজন বকুল মিয়ার পেটে ছুরি মেরেছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় এজাহার নামীয় ১০ জনসহ অজ্ঞাতনামা অরও ১০-১৫ জনের মধ্যে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

সদর থানার ওসি খান মো.শাহরিয়ার জানান,
বৃহস্পতিবার রাত জুড়ে অভিযান চালিয়ে মুল হত্যাকারীসহ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদেরও অাটকের চেষ্টা চলছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে।
###/