কুড়িগ্রামে কনের বাড়ীতে এসে বরের খালাতো ভাই খুন

আপডেট: মার্চ ৭, ২০২২
0

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার পুরাতন রেল স্টেশন সংলগ্ন মেথরপট্টিতে এক বিয়ের বাড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক যুবককে খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ওই যুবকের নাম রাহুল বাস্ফর (১৮)। সে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাচারি বাজার এলাকার প্রদিপ বাস্ফরের ছেলে। সোমবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক বরের খালাতো ভাই বলে জানিয়েছেন বরের পরিবারের সদস্যরা।

বরপক্ষের লোকজন জানিয়েছে, রোববার (৬ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে বরপক্ষ গাইবান্ধা সদর থেকে কুড়িগ্রাম সদরের পুরাতন রেল স্টেশন পাড়া এলাকা সংলগ্ন মেথরপট্টির সুমন বাস্ফরের মেয়ে অন্তরা রানী বাস্ফরের বিয়ে বাড়িতে আসে। রাতে সুষ্ঠুভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পরদিন (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে বরপক্ষকে বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছিলো। তখন বিয়ে বাড়ির মেয়ে পক্ষের কিছু যুবক মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় নাচানাচি করছিলো। এসময় বরপক্ষের একজনের সাথে তাদের গায়ে ধাক্কা লাগলে বরপক্ষের সাথে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাটি সংঘর্ষে রূপ নেয় এবং সেখানে বরের ছোট ভাই সহ অন্তত ৩ জন আহত হয়। উপস্থিত লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এর প্রায় ঘন্টাখানেক পরে বিয়ের বাড়ির নিকটে রেলস্টেশন বাজার মোড়ে বরের খালাতো ভাই রাহুল বাস্ফর সহ কয়েকজন অবস্থান করলে কনে পক্ষের এক যুবক রাহুলের বুকে ছুড়িকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় এবং তাকে বাঁচতে গিয়ে আরো কয়েকজন আহত হয়।

বর পক্ষের দাবী এই ছুড়িকাঘাতের ঘটনা নাচানাচি করার সময় সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।আর এই সুত্র ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের দাবি । পরে লাশ উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসা হয় এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বর রনি বাস্ফরের পিতা স্বপন বাস্ফর জানান, বিয়ের কাজ ঠিকমতই শেষ হয়েছিল। বিয়ের পর যখন আমরা মেয়েকে নিয়ে যাবো তখন বিয়ের বাড়ির বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আমরা হতবাক। সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। আমরা রাহুলের হত্যার বিচার চাই।

ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী রুবন বাস্ফর জানান, ঘটনার সময় আমি একটু দূরে অবস্থান করছিলাম। সকালের নাচা-নাচির সময় সংঘর্ঘের সুত্র ধরে কনেপক্ষের প্রতিবেশীর এক যুবক বাড়ি থেকে ছুড়ি নিয়ে এসে রাহুলের বুকে ঢুকিয়ে দেয়। সেখানে রাহুলের সাথে আরও কয়েকজন ছিলো। তারা রাহুলকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারাও আহত হয়। হামলাকারী ঐ যুবক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং তাকে তিনি চিনতে পারেননি বলেও জানান তিনি।

এব্যাপারে নববধূর পিতা সুমন বাস্ফর বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়িতেই ছিলাম। ওইদিকে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার জানা নাই। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। এছাড়াও মেয়ের বিবাহিত জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এই ঘটনায় বিয়ে বাড়ি সহ হাসপাতালে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বরপক্ষের লোকজন হামলাকারীর দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে হাসপাতালে চত্ত্বরে অবস্থান নিয়েছেন।
এব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) খান মো. শাহরিয়ার জানান, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িত ব্যাক্তিদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।
###