কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) ২য় বর্ষের ৩৬ জন পরিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়েও ফরম পূরন না করার অভিযোগ উঠেছে রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে। কলেজ অধ্যক্ষের এমন গাফিলতির কারনে প্রবেশ পত্র না পাওয়ায় অাগামী বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর, ২০২১ইং) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই শিক্ষার্থীদের।
এঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে প্রবেশপত্র না পাওয়া ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে ওই কলেজের প্রায় ৬ শত শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে রৌমারী উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে মিলিত হয়। পরে তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী রুপসী, সুমাইয়া, মিলন বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর স্যারের কাছে ফরম পূরনের জন্য তিন হাজার করে টাকা জমা দিয়েছি। পরীক্ষার প্রবেশপত্রের জন্য কলেজে গিয়ে দেখি আমাদের ৩৬ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র নেই। বিষয়টি অনান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে, আমরা সবাই অধ্যক্ষের রুমে গেলে, তিনি কলেজ থেকে পালিয়ে যান। অধ্যক্ষের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় আমরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ করি।
পরীক্ষার্থী হাফিজুর, সেলিম বলেন, এইচএসসি ১ম বর্ষের আমাদের ১৫৬ জন শিক্ষার্থীকে ফেলের কথা কথা বলে এক হাজার দুইশত করে টাকা নিয়েছে। আমরা পরে জানতে পারি কেউ ফেল করেনি। আমরা ছয়শত শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকা পাইনি। উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার করে টাকা সকল শিক্ষার্থীর কাছ নিয়েছে অধ্যক্ষ। আমাদের জীবনের বড় ধরনের ক্ষতি করল অধ্যক্ষ। তার গাফিলতির কারনে আমরা পরীক্ষা থেকে বিরত হলাম। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অত্র কলেজের একাধিক প্শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার করে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে তিনি নিজেই আত্মসাত করেন।
রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দেখেন, আমাদের করার কিছুই নেই।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বরাবর আমাকে একটি লিখিত স্মারক দিয়েছে রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি তদন্তপূবর্ক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইউএনও আরও বলেন, আজ ওই কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর আমাকে মুঠোফোনে বলেন শিক্ষার্থীরা কলেজে ভাংচুর চালাচ্ছে। তখন আমি ভাংচুরের কারন জানতে চাইলে, তিনি ফরম পূরন না করার বিষয়টি আমাকে জানান।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবদুর রহমান বলেন, গতকাল ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরনের সুযোগ ছিলো। আমাদের করার কিছুই নেই। কলেজের অধ্যক্ষ টাকা নিয়ে কেন ফরম পূরন করেনি, তা আমার বোধগম্য নয়। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পেলে পরীক্ষার কোন সুযোগ নেই।
###