গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্যই ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রীর মুক্তি অত্যন্ত জরুরী—-তারেক রহমান

আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২৩
0

গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্যই ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রীর মুক্তি অত্যন্ত জরুরী বলে মন্তব্য করেচেন তারেক রহমান। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাঠানো বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণীটি দিয়েছেন দেশ জনতা ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো—–

“৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সৈনিক-জনতা এক অদম্য শক্তিতে রাজপথে নেমে এসেছিলো জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুণরুজ্জীবনের দৃঢ় প্রত্যয় বুকে নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতাত্তোর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজ স্বার্থে জাতীয় স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে দেশকে এক অজানা গন্তব্যে ঠেলে দেয়। শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে একদলীয় হিংস্র শাসন-বাকশাল চালু করা হয়। ফলশ্রুতিতে মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা করে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, নিষিদ্ধ করা হয় দেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে। এতে জনমনে চরম অশান্তি ও হতাশা নেমে আসে। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও নির্দয় পন্থায় মানুষের সহজাত মৌলিক অধিকারগুলোকে হরণ করে।

সেই চরম সংকটকালে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে। শুরু হয় এক অরাজক পরিস্থিতি। এমতাবস্থায় ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং জিয়াউর রহমান বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত হন। এই অম্লান বিপ্লবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত হয়। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে বিকাশের পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। তারপরেও চক্রান্ত থেমে থাকেনি, বিদেশী শক্তির এদেশীয় অনুচররা তাদের উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে দেশমাতৃকার বীর সন্তান রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করে। জিয়া শাহাদত বরণ করলেও তাঁর আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পরাজিত গোষ্ঠী আবারো নব্য বাকশালী সরকার রাষ্ট্রক্ষমতাকে অবৈধভাবে আঁকড়ে আছে। সরকারের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশীয় রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির স্বাধীন সত্ত্বাকে হরণের চেষ্টা থেমে নেই। গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা আজ নির্বাসিত। দেশে এক ঘোর দুর্দিন বিরাজমান। জ্বালানী তেলসহ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ।

তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদেরকে অবৈধ শাসগোষ্ঠী বিভৎস নির্মমতায় হত্যাসহ আহত করছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের হিড়িক চালাচ্ছে। নির্যাতনের এই অব্যাহত ধারায় ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো বন্দী। তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্যই ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রীর মুক্তি অত্যন্ত জরুরী। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

আমি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”