গাজীপুরে বিয়ে অনুষ্ঠানের আগের দিন অটোচালক খুন, স্ত্রীর দুই ভগ্নিপতিসহ গ্রেফতার ৬

আপডেট: ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
0

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানের আগের দিন অটোরিকশা চালক এক যুবককে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। ক্লুলেস এ খুনের ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর দুই ভগ্নিপতিসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- নরসিংদী হিজুলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে জামাই শফিকুল (২৫), গাজীপুরের বনখড়িয়া এলাকার আফ্রিদি (১৯) ও হানিফ (২৭), একই জেলার বাউপাড়া এলাকার রাকিব হোসেন (২২), জামালপুরের দর্জিপাড়া এলাকার মোঃ রাজিব শেখ (২২) এবং ময়মনসিংহের মিছিটেঙ্গী এলাকার জুয়েল রানা (২৭)। এদের মধ্যে রাকিব ও জুয়েল রানা নিহতের স্ত্রী কারিমার বড় ভগ্নিপতি এবং রাজিব বড় ভাইয়ের (কারিমার) শ্যালক।

পিবিআই’র ওই কর্মকর্তা জানান, গত কিছুদিন আগে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার মঞ্জুুরুল এর মেয়ে কারিমাকে গোপনে বিয়ে করেন শরিফুল ইসলাম (২০)। শ্রীপুর থানাধীন বনখড়িয়া এলাকার মৃত নায়েব আলীর ছেলে শরিফুল এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন। কারিমাকে পছন্দ করতো তার বড় ভাইয়ের শ্যালক রাজিব। এদিকে এ বিয়ে মেনে নিতে পারে নি কারিমার দুই বড় ভগ্নিপতি রাকিব ও জুয়েল। অপরদিকে এ বিয়ে মেনে নিয়ে মেয়েকে ১০ ডিসেম্বর সামাজিকভাবে পাত্রস্থ করার দিন নির্ধারণ করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন কারিমার বাবা। এতে ক্ষুব্ধ হয় কারিমার দুই ভগ্নিপতিসহ রাজিব। তারা শরিফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তারা শরিফুলকে হত্যার জন্য তার বন্ধু আছমত ও অন্য সহযোগীদের সঙ্গে একলাখ টাকার চুক্তি করে।

তিনি জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠানের আগের দিন (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তারা শরিফুলকে কৌশলে শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া এলাকার গজারী বনের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানে তারা এক সঙ্গে বসে সিগারেট ও গাঁজা সেবন করে। এসময় গলা চেপে ধরে শরিফুলকে মাটিতে শোয়ায়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যায় তারা। বিকেলে নিহতের স্বজনরা ওই বন সংলগ্ন বনখড়িয়া বাজার-রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট বিপসট গেইট (চেকপোষ্ট-১) সড়কের পাশ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় শরিফুলের অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। তবে শরিফুলের সন্ধান পান নি তারা। খোজাখুঁজির একপর্যায়ে পরদিন (১০ ডিসেম্বর) সকালে বনের ভিতর গলা কাটা অবস্থায় শরিফুলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। ক্লুলেস এ খুনের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরো জানান, মামলাটি পিবিআই এর সিডিউলভুক্ত হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ খুনের মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুরের পিবিআইকে। পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে শুক্রবার পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত ওই ৬জনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের জড়িয়ে এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে স্বীকারোক্তি দেয়। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।