গাজীপুরে স্ত্রী ও ছেলেকে কুপিয়ে এবং গলাকেটে খুন

আপডেট: মার্চ ২১, ২০২২
0
ক্যাপশনঃ গাজীপুর ঃ নিহত মা ও ছেলে।

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে এক রিক্সাচালক গলা কেটে ও কুপিয়ে তার স্ত্রী এবং ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। সোমবার ভাড়া বাসার তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে জিএমপি’র গাছা থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি বটি দা’ এসময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইলের মধুপুর থানার ইদুলপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী রহিমা বেগম (৪০) এবং রহিমার প্রথম সংসারের ছেলে গার্মেন্টসকর্মী রোকন (১৮)। নিহত রহিমা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার রামভদ্রপুর এলাকার মৃত ঈমান আলীর মেয়ে এবং রোকন একই এলাকার বেলালের ছেলে।

নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, প্রথম স্বামী বেলালের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ায় প্রায় ১০ বছর আগে মফিজ উদ্দিনকে বিয়ে করেন এক সন্তানের জননী রহিমা বেগম। প্রথম সংসারের সন্তান রোকন (১৮) রহিমার সঙ্গেই থাকতো। রোকন ছাড়াও এ সংসারে রহিমার আরো দুই শিশু সন্তান (একটি ছেলে ও একটি মেয়ে) রয়েছে।

জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, গাজীপুর সিটি কপোর্রেশনের গাছা থানাধীন পূর্ব কলমেশ্বর এলাকার ডেঙ্গুর আলী সড়কের নাছিরের বাড়িতে ভাড়া বাসায় স্বপরিবারে থাকতেন মফিজ উদ্দিন (৫৩)। তিনি এলাকায় রিক্সা চালাতেন। গত কিছুদিন ধরে মফিজ উদ্দিন ও তার স্ত্রী রহিমা বেগমের মাঝে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এর জেরে তাদের মাঝে বাকবিতন্ডা হতো। মফিজ উদ্দিন মাঝে মধ্যেই স্ত্রী সন্তানদের মারধর করতেন। রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মফিজ বাসায় ফিরেন। এসময় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। পরে রাতের খাবার খেয়ে রহিমা তার তিন সন্তান ও স্বামীসহ ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মফিজ উদ্দিন বটি দা’ দিয়ে তার স্ত্রী রহিমার গলার নীচে বুকে কোপ দিয়ে খুন করে। এসময় রোকন ঘুম থেকে জেগে উঠলে মফিজ তাকেও গলায় এবং ঘাড়সহ বাম কানের নীচে সজোরে দু’টি কোপ দেয়। এতে রোকনও ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। ঘটনার সময় ৮ বছরের অপর ছেলে সন্তান জেগে উঠে কান্নাকাটি শুরু করলে ঘাতক মফিজ উদ্দিন ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় দরজা বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে যায় সে। শিশুদের কান্নাকাটি শুনে প্রতিবেশীরা জেগে উঠেন। তারা ঘরের খাটের উপর নিহতদের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি বটি দা’ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মফিজ উদ্দিনকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।