‘গ্যাস ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে হবে’

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
0

আজ ১৯ ফেব্রুয়রি ২০২২, শনিবার বিকাল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা জেলার উদ্যোগে ভোটাধিকার ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং ভোজ্যতেল চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং গ্যাস-পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভব সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একই দাবিতে গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় শহরে ও জেলা শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঢাকা জেলার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা জেলার আহ্বায়ক বাচ্চু ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদক ম-লীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু, কেন্দ্রীয় সদস্য অঞ্জন দাস, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, সম্পাদক মাহবুব রতন, ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকার সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট হিসেবে বিদ্যুৎ খাতে, মেগা প্রকল্পে, ভূমি অধিগ্রহণে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে এবং মানুষের পকেট কেটে লুটপাট করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে। কুইক রেন্টালের ভর্তূকি নিশ্চিত করার জন্য নতুন করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। ওয়াসার দুর্নীতি ও সিসটেম লস নিয়ন্ত্রণ না করে পানির মূল্য বৃদ্ধি করে মানুষের মাথায় নতুন করে খরচের বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে। ক্ষমতায় আসীন থাকার জন্য যেহেতু জনগণের ভোটের দরকার হয় না, ভোট চুরি করে পুলিশ ও প্রশাসন দিয়ে ভয় দেখিয়ে, নির্যাতন করে রাতেই ভোট নিশ্চিত করা যায় ফলে মানুষের ভালো মন্দের খবর রাখার দরকারও সরকারের নাই। এই অবস্থা আর চলতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, পুলিশ দিয়ে, মামলা দিয়ে, গুম-খুন-ক্রস ফায়ার দিয়ে মানুষকে আর দাবায়ে রাখা যাবে না। যে বিদেশী শক্তির ভরসায় আবার ক্ষমতায় আহরণ করতে চাইছে এই সরকার সেখানেও পরিস্থিতি নড়বড়ে। তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করছেন, বিদেশীদের পায়ে ধরে দেশের সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিচ্ছেন। কাজেই এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয় নয়। তিনি সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম ও পানির মূল্য বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা ফিরিয়ে নিতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্যথায় আগামী ২ মার্চ জেলায় জেলায় ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ এবং ৩ মার্চ ঢাকায় সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। এতেও যদি কাজ না হয় বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচিও দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করা নিয়ে সরকার নাটক করছে। এই নাটকে যারা অংশ নিতে চান নেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এই নাটকে অংশ নিবে না। কোনভাবেই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। এই মূহুর্তের জনদাবি হচ্ছে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্বাচনকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকারের রূপরেখা কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কেবল একটি নির্বাচন এবং একবারের ভোটাধিকারের ব্যাপার নয়, বাংলাদেশের মানুষ চায় ভোটাধিকার রক্ষা করার স্থায়ী সমাধান। রাষ্ট্রের এই বর্তমান বন্দোবস্ত টিকিয়ে রেখে ভোটাধিকার অর্জন করা সম্ভব নয়। শাসনের এই ব্যবস্থা সমগ্র দেশকে এক ব্যক্তির জমিদারিতে পরিণত করে। ফলে এই ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটানোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সেটাই দেশবাসীর সামনে এই মূহুর্তের প্রধান কর্তব্য।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় জাদুঘর থেকে হাতিরপুল কেন্দ্রীয় অফিস পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।