মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে তৈরি হয়েছিল ‘দ্য হেজায রেলওয়ে’

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
0

জর্দানের রাজধানী আম্মানের ধূলিধূসরিত প্রধান সড়ক দিয়ে চলার সময় হয়ত হেজায রেলওয়ে স্টেশন আপনার চোখে পড়বে না।

সেখানে যাওয়ার জন্য আপনাকে শহরের ভেতরের সর্পিল পথ দিয়ে বেশ কিছুটা যেতে হবে। আম্মান শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্র, পর্বত আর দুর্গকে কেন্দ্র করে তৈরি করা সেসব রাস্তা গোলকধাঁধার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। শহর থেকে হেজায রেলওয়ে স্টেশনের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার হলেও আম্মানের ট্রাফিক জ্যামের কারণে সেখানে পৌঁছাতে প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশিই সময় লাগে।

পাথর দিয়ে তৈরি রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ দ্বার দিয়ে ভেতরে ঢোকার সাথে সাথেই আপনার মনে হবে আপনি হঠাৎ ভিন্ন এক যুগে, অথবা ভিন্ন এক পৃথিবীতে এসে পড়েছেন। এখানে এখনো স্টিম ইঞ্জিন বা বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালিত ট্রেন চলে। এই রেল লাইন মুসলিম বিশ্বকে একত্রিত করবে-যারা এটি তৈরি করেছিলেন তারা এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন।

মক্কা নগরীতে সহজে এবং নিরাপদে সফর করার উদ্দেশে ১৯০০ সালে ‘দ্যা হেজায রেলওয়ে’ প্রকল্প শুরু করেছিলেন দ্বিতীয় আবদুল হামিদ, যিনি ওসমানিয়া সালতানাতের (বর্তমান তুরস্ক) সুলতান ছিলেন। তার আগ পর্যন্ত উটের কাফেলায় কয়েক সপ্তাহ ধরে মক্কায় সফর করতেন মুসলিম হজযাত্রীরা।

সেসময় দামেস্ক থেকে মক্কায় পৌঁছাতে অন্তত ৪০ দিন সময় লাগতো। যাত্রা পথে শুষ্ক মরুভূমি আর পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে গিয়ে কাফেলার বহু যাত্রীর মৃত্যুও হতো। রেলওয়ে প্রতিষ্ঠার পরে এই ৪০ দিনের যাত্রা নেমে আসে মাত্র পাঁচ দিনে।

এই প্রকল্পের অধীনে রেলওয়ে লাইনের দামেস্ক-মদিনা অংশ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তৎকালীন কনস্টান্টিনোপোল পর্যন্ত রেল লাইন তৈরির কাজ শুরু হয়, যা উত্তরে ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের রাজধানী থেকে দক্ষিণে মক্কা নগরী পর্যন্ত যোগাযোগের রাস্তা তৈরি করে। তবে মুসলিম ইতিহাসে এই রেল প্রকল্পের তাৎপর্য কিন্তু স্রেফ এতটুকুই নয়।