দেশের চলচিত্র অভিনেত্রী ও মডেল শিল্পীসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেফতার করাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতি।
আমরা গভীর বিষ্ময়, উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করলাম যে. অভিনেত্রী ও মডেল শিল্পী সহ কয়োকজন নারীর ঘরে মাদক রাখা, বাড়িতে পার্টি দেয়া ও অন্যান্য এ ধরনের অপরাধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করে যা,কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোন নারী ঘটনার শিকার বা অভিযুক্ত যাই হোক না কেন, এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হয়, যাতে নারীর আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এই ধরনের সংবাদ প্রচার নারীর মানবাধিকার লংঘনের সামিল।
অতীতেও দেখা গেছে অপরাধের মূল কারিগরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হয়নি, ফলে অর্থ,বিত্ত ও ক্ষমতার মাধ্যমে সমাজে অবক্ষয় এ অনাচার সৃষ্টি করা এবং এ ক্ষেত্রে নারী ও কন্যাদের ব্যবহার করার অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এই প্রবণতা যে নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে এই ঘটনাগুলো তারই প্রতিফলন। মহিলা পরিষদ মনে করে যে, এই সকল ঘটনার হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে ।
আমরা দেখি কোন কোন ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই তাকে দোষী সব্যস্ত করা হয়, যা বিচার,ও প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থাকে দুর্বল করে তোলে।
আমরা লক্ষ্য করলাম এই ক্ষেত্রেও সংবাদ অব্যাহত উপস্হাপন ও শদ প্রয়োগের মাধ্যমে পাঠক দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে, যা সুস্থ সাংবাদিকতার পরিপন্থী।
এই ঘটনাসমূহ নারীর প্রতি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। যখন গণমাধ্যমকে জেন্ডার সংবেদনশীল করতে নারী আন্দোলন বিশেষ ভূমিকা রাখছে, গণমাধ্যমও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সময়ে সহযোগী ভূমিকা রেখে চলেছে, সেইসময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোন কোন গনমাধ্যের ভূমিকা নারীর মানবাধিকারকে ক্ষুন্ন করছে।
অপরদিকে অভিযুক্তদের শিল্পী হিসেবে অস্বীকার করায় ও শিল্পী সমিতির ভুমিকায় আমরা বিস্মিত।
আমরা গণমাধ্যম সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ব্যক্তি নারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন করে ও মানবাধিকার লংঘন করে কোন ধরনের সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাই কারণ বিচারের আগেই এই ধরণের সংবাদ পরিবেশন ব্যাপক নারীসমাজের ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি করবে।
