জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করুন নইলে পালাবার পথ খুঁজে পাবে না– সরকারকে মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২২
0

জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকার পদত্যাগ না করলে পালাবার পথ খুঁজে পাবে না’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি বলেছেন যে, আমাদেরকে নাকী তওবা করে নির্বাচনে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমি উনাকে বলতে চাই, জনগনের কাছে তওবা করে ক্ষমা ভিক্ষা চান আপনাদের কৃতকর্মের জন্য। যে মানুষ হত্যা করেছেন, আজকে যাদেরকে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যিনি গণতন্ত্রের মাতা তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখেছেন এবং ৩৫ লক্ষ রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন, ৬‘শ বেশি মানুষকে গুম করেছেন।”

‘‘ যে অন্যায় পাপ করেছেন, সেই পাপের জন্য জনগনের কাছে করজোরে ক্ষমা ভিক্ষা চান এবং ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যায় যেকথা আমাদের ইব্রাহিম ভাইয়েরা( সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম) বলেছেন, ফজলু ভাইয়েরা(অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান) বলেছেন যে, পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।”

বিএনপি মহাসচিব জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘‘ এজন্য আজকে প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি ঐক্যের। এজন্য আমরা আহবান জানিয়েছি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে-ব্যক্তিকে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে-আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।”

‘‘ আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন তাকে মুক্ত করি, ৩৫ লক্ষ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা রয়ে্ছে তাকে প্রত্যাহার করি এবং দেশে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগনের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগনের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করি, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করি।”

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে পেশাজীবীদের ভুমিকা: বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

‘দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি সরকারের ষড়যন্ত্র’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে যখন মানুষ ট্রাকের সামনে লাইন দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য, চাল-ডাল-তেল-লবনের জন্য যখন মানুষ আহাজারি করছে সেই সময়ে আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে, আবার প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে নেবার ষড়যন্ত্র তারা করেছে জনগনের পকেট কেটে জনগনকে দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে।প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আজকে এই সরকার, তাদের মদদপুষ্ঠ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে জনগনকে পুরোপুরিভাবে একটা দুঃসহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।’’

‘‘ আজকে বাংলাদেশকে যদি রক্ষা করতে হয়, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্যে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেই লক্ষ্যকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, জনগনের অধিকারগুলো যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, আমাদের ভোটের অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, আমাদের বেচে থাকার অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’’

দেশে গ্যাসের মজুদ থাকা সত্বেও তা উত্তোলন ও গ্যাস বিতরণে অপচয় রোধে কোনো ব্যবস্থা সরকার না দিয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে ‘গণশুনানী’ করছে বলে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘‘ উদ্দেশ্যে এই গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা। কারা আমদানি করছে? এই সরকারের যারা উপদেষ্টা, এই সরকারের প্রশ্রয় নিয়ে যারা একছত্র ব্যবসা করছে তারা আজকে গ্যাস আমদানি করছে। সুতরাং তাদের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়ার জন্য আজকে সেটা জনগনের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।’’

বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কল্যান পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, পেশাজীবী নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, আব্দুল কুদ্দুস, এম আবদুল্লাহ, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম, নুরুল আমিন রোকন, রফিকুল ইসলাম, একেএম জহিরুল ইসলাম, কাজী সাখাওয়াত হোসেন, জাকির হোসেন, জাহানারা সিদ্দিকী, ফখরুল আলম, বিপ্লব উজ্ জামান বিপ্লব, তানভীরুল আলম প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।