জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ও পার্লামেন্ট গঠনে আমাদের লড়াই -সংগ্রাম করতে হবে – মীর্জা ফখরুল

আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১
0

আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাতময় পরিস্থিতি ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষন’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “ আজকে দেখুন যেহেতু আওয়ামী লীগের জনগনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন। এজন্যে এখন নির্বাচিত প্রতিনিধি বলতে তারা যা বুঝাচ্ছে সেই ধরনের লোকগুলো আওয়ামী লীগের, তাদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়েছে।”

“ শুধু একটি জায়গা না, শুধু বরিশাল না। ইতিপূর্বে অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি যে, প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটা সংঘর্ষ হচ্ছে, সংঘাত হচ্ছে। এটা একটা লক্ষন যে, বাংলাদেশ বর্তমানে রাষ্ট্র হিসেবে যে ব্যর্থ হচ্ছে তার এটা লক্ষন এটা।”

এই অবস্থায় থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান রেখে ফখরুল বলেন, “ আজকে যেটা প্রয়োজন-আমাদের নেতা যিনি নির্বাসিত অবস্থায় বহু দূরে আমাদের থেকে অবস্থান করছেন তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমাদের নেত্রী তিনি আজকে এখনো পর্যন্ত বন্দি অবস্থায় আছেন। তাকে মুক্ত করা, নেতাকে দেশে ফিরিয়ে আনা, দেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করা সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

‘‘অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে একটা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে আমাদেরকে এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাদেরকে বাধ্য করতে হবে যে, একটি নিরপেক্ষকালীন সরকারের মধ্য দিয়ে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন হতে পারে, একটি পার্লামেন্ট গঠন হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন আপনারা দেখেছেন যে, করোনা সময়ে তাদের ব্যর্থতার কারণে করোনাকে এখানে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। আজকে অর্থনীতি নিচের দিকে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না, মানুষ দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্র হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরো ধীরে ধীরে রসাতলের দিকে যাচ্ছে।”

“ বর্তমান সরকার কোনো গণতান্ত্রিক নর্মসে বিশ্বাস করে না, তারা মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না, তারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র তারা নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্যে এবং তাদের যে লক্ষ্য ১৯৭৫ সালে সফল করতে পারেনি-একদলীয় একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্যে তারা সমস্ত গণতন্ত্রের যে নর্মস, উদার রাষ্ট্রের যে সমস্ত ব্যবস্থা তাকে ধবংস করে দিয়ে তারা আজকে জনগনের মাথার ওপর চেপে বসে আছে।”

ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের কর্মময় জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে নেতা-কর্মীর প্রতি আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ’ এর উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।

স্মৃতি সংসদের সভাপতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, স্মৃতি সংসদের এম সিরাজুল হক, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সুলতান মাহমুদ বাবু, নিলোফার চৌধুরী মনি, ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ওয়ারেস আলী মামুন, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এম তোজাম্মেলন হোসেন, শামসুজ্জামান মেহেদী এবং প্রয়াত ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের জামাতা মাহমুদুল হাসান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

এই ভার্চুয়াল আলোচনায় ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের সহধর্মিনী মাহমুদা সালাম, একমাত্র কণ্যা সালিমা বেগমসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।