জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ উদযাপন করেছে বিজিবি

আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২২
0

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ উপলক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে বিজিবি সদর দপ্তরসহ অন্যান্য সকল ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১১ টায় বিজিবি সদর দপ্তরসহ অন্যান্য সকল ইউনিটে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর বিশেষ আলোচনা এবং ১৯৭৪ সালের ০৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর তৃতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ও ‘সতীর্থ এসো সত্যাশ্রয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, এসপিপি, এনএসডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবি মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বিজিবি’র সকল সদস্যের পক্ষ হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম একটি ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর জন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাস ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্য দিয়ে একজন রূপকারের জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা একইসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান,৭০’র সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান অবিস্মরণীয়। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তির দিশা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এ ভাষণ UNESCO-এর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য পরম পাওয়া ও অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবন্ধুর রয়েছে দীর্ঘ কারাবরণের ইতিহাস। বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বাদ এবং স্বাধীনতা দেবার লক্ষ্যে আজীবন সংগ্রাম করেছেন, অকাতরে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন সহজসাধ্য ছিল না। বঙ্গবন্ধু অতি অল্প সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান রচনাসহ পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, শিল্পনীতি, খাদ্য ব্যবস্থা, ব্যাংক ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করে বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজে ঈর্ষনীয় সাফল্য দেখিয়েছিলেন। তিনি দেশে দেশে ঘুরে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের পাশাপাশি দেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছেন। তিনিই প্রথম জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ প্রদান করে বাংলাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এলক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি মহাপরিচালক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার জন্য সকলকে নিবেদিত প্রাণ হয়ে দৃপ্ত অবদান ও ভূমিকা রাখার আহবান জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বাদ যোহর পিলখানাস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিট কর্তৃক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জন্য দোয়া এবং দেশ ও মানুষের সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

এ সকল অনুষ্ঠানে বিজিবি’র সকল পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক সহ সকল বেসামরিক কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পিলখানা সহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।