জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ঃ পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবীতে অকৃতকার্য শিক্ষাথর্ীদের ফের বিক্ষোভ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
0

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষাথর্ীরা পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবীতে ফের বিক্ষোভ করেছে। রবিবার গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন ও এলাকাবাসি জানায়, ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফল গত ২০ জুলাই প্রকাশিত হয়। ওই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া চট্রগ্রাম সরকারি কলেজ, বরিশাল বিএম কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, টঙ্গী সরকারি কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজেরসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাণের শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে একই দাবীতে তারা গত ১১ ও ১৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসুচি পালন করেছে তারা।

ছবির ক্যাপশন ঃ
গাজীপুর ঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২০ জুলাই ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ফলাফলে ৭২ শতাংশ কৃতকার্য হয়। অবশিষ্ট ২৮ শতাংশ পরীক্ষাথর্ীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। এ ফলাফল নিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। ঘোষিত ফলাফলে সাড়ে ২৪ হাজারের বেশী শিক্ষার্থীকে এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। স্বশরীরে পরীক্ষায় অংশ নিলেও অনেক শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। অনেক শিক্ষাথর্ী চতুর্থ বর্ষের ১০টি কোর্সের মধ্যে ৯টিতে প্রথম শ্রেণী পেলেও তুলনামূলক সহজ বিষয়ে যেমন সাংগঠনিক আচরণ, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিতে গণহারে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। যা হতাশা জনক ও লজ্জাদায়ক। আশানুরূপ ফলাফল না আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হওয়ায় তারা এ ফলাফল মেনে নিতে পারছেনা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও দায়সারাভাবে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এছাড়াও উক্ত শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা ২০১৯ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও দুই বছর দেরীতে ২০২১সালে শেষ হয়। চার বছরের বিপরীতে ছয় বছর লেগে যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে এবং চাকুরির পরীক্ষা হতে বঞ্চিত হয়েছে। তাই ওই পরীক্ষার ফলাফল সঠিক মূল্যায়ন করে শীঘ্রই ফলাফল ঘোষণার দাবী জানান আন্দোলনরতরা। নতুন করে পরীক্ষার খাতাগুলোর নম্বর প্রদান সম্ভব না হলে পুনঃনিরীক্ষণের মাধ্যমে ন্যূনতম গ্রেড দিয়ে অকৃতকার্যদের উত্তীর্ণ করিয়ে দেয়ার দাবী করেন। পরীক্ষার খাতার সঠিক মূল্যায়নের পরেও কোন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলে শীঘ্রই অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা সম্পন্ন করে তাদের ফলাফল প্রদানেরও দাবী জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে ২২ হাজার শিক্ষার্থীর ২৬ হাজার খাতা পুনঃমূল্যায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ওই খাতা পুনঃমূল্যায়নের পর ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে শতকরা ২৮ ভাগ ফেল করার বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ এখানে অন্ততঃ ১০ ভাগ পরীক্ষাথর্ী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।