দক্ষিণ সিটির ১০ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান; সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করায় ১১ মামলা

আপডেট: এপ্রিল ১৫, ২০২১
0

সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের আওতায় আরোপিত বিধিনিষেধ শর্তাবলি তদারকিতে আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) আওতাধীন এলাকায় একযোগে ১০ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে। ঢাদসিক এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতসমূহের নেতৃত্ব দেন।

অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এবং অনুমোদনবিহীন দোকান খোলা রাখায় মোট ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঢাদসিক এর আঞ্চল-১ এর আনিক মেরিনা নাজনিন আজ আজ বেইলী রোড, মগবাজার, হাতিরপুল ও নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ৩টার পর যেসব দোকানপাট, কাচাবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল সেসকল বন্ধ করা হয়। হাতিরপুল ও নিউমার্কেট কাচা বাজারে ব্যবসায়ীদেরকে বাজারের বাইরে রাস্তার একাংশে বসে সাময়িকভাবে মাছ-মাংস, তরিতরকারি বিক্রিকে উতসাহিত করেন।

অঞ্চল-২ এর আনিক সুয়ে মেন জো তত্ত্বাবধানে শাহজাহানপুর বাজার, মতিঝিল কলোনী বাজার, শান্তিনগর বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় ১৫০টি দোকান ও ব্যক্তিকে বিভিন্ন কারণে সতর্ক করা হয়।

অঞ্চল-৩ এর আনিক বাবর আলী মীর ২৬ নং ওয়ার্ডের পলাশী মোড় কাঁচাবাজার ও ৫৫ নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।

আঞ্চল-৪ এর আনিক মো. হায়দর আলী ৩২, ৩৪, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুবাজার, কাপ্তানবাজার, ধোলাইখাল, বাহাদুর শাহ পার্ক ও লালকুটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

আঞ্চল-৫ এর আনিক মো. শাহীনুর আলম ৭ নং ওয়ার্ডের মানিকনগর বাজার ও ৪৪ নং ওয়ার্ডের সূত্রাপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।

অঞ্চল -৬ এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৭০নং ওয়ার্ডের টুলটুলিয়া বাজার ও ধীৎতপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি সরকারি বিধিনিষেধ যথাযথভাবে পরিপালন না করায় প্রায় ৫০টি দোকানকে সতর্ক করেন।

অঞ্চল -১০ এর আনিক মোহাম্মদ মামুন মিয়া ৫৮ নং, ৬০ নং ও ৬১ নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর ও দনিয়া এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

এছাড়াও ঢাদসিক এর সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত খিলগাও ও সিপাহীবাগ বাজারসহ অঞ্চল ২ এর অন্যান্য বাজার ও দোকানপাট পরিদর্শন করেন। এ সময় সরকারী বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় আদালত ৫টি মামলা দায়ের ও নগদ ৮ হাজার ৩ শত টাকা জরিমানা আদায় করেন।

করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা অঞ্চল-৩ এর পলাশী বাজারসহ আরও করেন এবং সরকারি বিধিনিষেধ মেনে না চলায় ২টি মামলার মাধ্যমে ১ হাজার ২ শত টাকা জরিমানা আদায় করেন।

কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ আজ অঞ্চল ০৫, ০৯ ও ১০ এর বিভিন্ন
জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় আদালত সরকারের আদেশ না মেনে দোকান খোলা রাখা, মাস্ক না পরে জনসমাগমস্থলে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে ০৪টি মামলা দায়ের করেন এবং ৫ হাজার ৯ শত টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।

অভিযান প্রসঙ্গে করপোরশেনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের বলেন, “জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে এবারের লকডাউন দৃশ্যমানভাবে মেনে চলছে। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় সরকারি বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা আমরা দেখেছি। সাধারণত আমরা জনগণকে জরিমানা করতে চাইতে চাই না। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এবারের লকডাউনে আমাদেরকে একটু কড়াকড়ি আরোপ করতেই হচ্ছে। সেই আলোকে আজ সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে দোকানপাট খোলা রাখায় ৫টি মামলা দায়ের ও তাদেরকে জরিমানা করেছি।”

এছাড়াও ঢাদসিক এর অন্যান্য অঞ্চলেও অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে আদালতসমূহের সাথে স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন।

অভিযানে প্রায় সকল আদালতই লকডাউনের নির্দেশনা মেনে চলতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন। এছাড়াও বিনা প্রয়োজনে অযথা বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন এলাকায় লকডাউনের নির্দেশনাবলি মেনে চলতে মাইকিং করা হয় এবং নির্দেশনা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিষয়টি বারংবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়