দেশে শত শত গুমের হোতা হচ্ছে সরকারী এজেন্সীগুলো—তারেক রহমান

আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২২
0

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশে শত শত গুমের হোতা হচ্ছে সরকারী এজেন্সীগুলো। ‘যার নতুন ঠিকানা ফাঁস হয়েছে ‘আয়না ঘর’ নামে। গুম হচ্ছে অখন্ড কর্তৃত্ববাদী বর্বর শাসনেরই অনুসঙ্গ।

গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বাণীটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।

তারেক রহমান বলেছেন, “৩০ আগস্ট, সারাবিশ্বে বিভিন্ন সময়ে গুম হয়ে যাওয়া মানুষদের স¥রণে আন্তর্জাতিক দিবস। হারিয়ে যাওয়া মানুষদের স¥রণে জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটি ২০১১ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে শত-শত গুমের ঘটনায় বাংলাদেশিরা আজ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্যান্য যারা গুম হয়েছেন তাদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং নিখোঁজ মানুষদের পরিবারের প্রতি জ্ঞাপন করছি সমবেদনা। এমন বাস্তবতার মধ্যে বিশে^র অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে আন্তর্জাতিক গুম দিবস।

গুম এখন বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ভিন্নমতের মানুষদের নির্মূল করার প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারিরা এই হাতিয়ার ব্যবহার করে যথেচ্ছভাবে। বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গুমের শিকার হয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। পরিবার-পরিজন থেকে হারিয়ে গেছে প্রিয় মানুষটি। দেশে বিরোধী দল-বিরোধী মত ও বিরোধী রাজনৈতিক বিশ্বাস দমন করার জন্য সমাজে সন্ত্রাস ও ভয় সৃষ্টির লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার নির্বিচারে গুমকে ব্যবহার করে আসছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অব্যাহতভাবে গুম করা হচ্ছে সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ মানবাধিকার কর্মী, লেখক, সাংবাদিক, সাধারণ ছাত্র-যুবক এমনকি গৃহবধূও।

তারা জীবিত না মৃত তা জানা নেই। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ফেরত দিলেও বাকীরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামসহ ছাত্র, যুবক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, মুক্তমনা মানুষকে গুম করা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাশর্^বর্তী দেশে পাচার করা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিমূর্লের এই মনুষ্যত্বহীন সংস্কৃতি বাংলাদেশে ছিলনা, আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসলেই কেবলমাত্র এই পৈশাচিক সংস্কৃতি চালু করে। অধিকাংশ পরিবারই অভিযোগ করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়েই তাদের উঠিয়ে নিয়ে গেছে। মানুষের এখন জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।

বর্তমানে যেদেশে জীবন্ত মানুষ অদৃশ্য হয়ে যায় সেই দেশে জঙ্গলের আইনই চলে। এইসব গুমের সাথে রাষ্ট্র জড়িত। বাংলাদেশে শত শত গুমের হোতা হচ্ছে সরকারী এজেন্সীগুলো। যার নতুন ঠিকানা ফাঁস হয়েছে ‘আয়না ঘর’ নামে। গুম হচ্ছে অখন্ড কর্তৃত্ববাদী বর্বর শাসনেরই অনুসঙ্গ। গুম হওয়া পরিবারগুলো অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের প্রিয়জনকে ফেরত পাওয়ার জন্য। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কন্ঠে বর্তমান অপশাসনের অবসানের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে। গুম করা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। গণতন্ত্র ফিরে আসলেই জবাবদিহিতা ফিরবে এবং গুমের অবসান হবে”।