সদ্য গঠিত নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রধানমন্ত্রীর ‘কিচেন কমিশন’ অভিহিত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ইসি গঠন হলেই কি আর না হলেই কি? এই নির্বাচন কমিশন তো গঠিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে। তাছাড়া নির্বাচন তো করবেন ডিসি-এসপিরা।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শহীদ জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ করেন রুহুল কবির রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকতে নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, সেটা তো প্রধানমন্ত্রীর ‘কিচেন’ কমিশন। এর বাইরে তাদের তো কোনো ভুমিকা থাকবে না। কারণ, ভোট তো তারা করবে না। ভোট করবেন ডিসি-এসপিরা। যদিও নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তারা তো স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পারবে না। সেখানে প্রশাসন ক্যাডারের সিনিয়রদের দিয়ে কমিশন হয়েছে। মূলত যাদের চিন্তা চেতনা আওয়ামী রঙে রঙিন, তাদের দিয়েই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা আমরা আগেও দেখেছি। যারা আওয়ামী লীগের রঙে রঞ্জিত তাদের দ্বারাই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তো ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় রয়েছে, যাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সুতরাং, জনগণ বাঁচলো কি মরলো সেদিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যে কারণে আজকে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত এবং স্বল্প আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দুঃসহ অবস্থা। মানুষ দম নিতে পারছে না।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, তাতে মানুষের শ্বাসনালী টেনে ধরা হয়েছে। আজকে সাধারণ মানের খাবারের চালও ৬৫-৭০ টাকা। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় চিনি, বাচ্চাদের গুড়ো দুধ সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। পেয়াজ বলুন আর মরিচ, ভোজ্যতেলসহ মানুষের একান্ত প্রয়োজনীয় সব খাবারের দামই বেড়েছে। মার্কেটে যারা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে, তারাতো সরকারের লোক। বাজারের মাফিয়া এরা সব সরকারের লোক। সব জায়গায় সরকার তার লোক লাগিয়ে রেখেছে যে জনগণকে শোষণ করো।
রিজভী বলেন, আজকে যদি সত্যিকারের নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার ক্ষমতায় থাকতো এসব হতো না। আজকে বাজারে তো সব সরকারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। সব জায়গায় তাদের লোক লাগিয়ে রাখা হয়েছে যে, জনগণকে শোষণ ও লুট করো। আত্মসাৎ করো। জনগণের টাকা লুটের অংশ হিসেবে বাজারে সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজন্য আওয়ামী সিন্ডিকেট দায়ী।
মৎস্যজীবী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংশ্লিষ্টদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রিজভী বলেন, দেশের বিশাল অংশ জলাভূমি। আমাদের পুষ্টির একটি অংশ সাধিত হয় মাছ দিয়ে। দেশের বিরাট একটি শ্রেণী মাছের চাষ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। সুতরাং তাদেরকে জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এসম বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ছাড়াও মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের নেতৃত্বে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম মিঞা, জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, হাবিবুল হক হাবিব, জাহাঙ্গীর আলম সানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
