নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন করতে হবে: বিএনপি

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
0

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টায় গুলশান চেয়ারপার্সন অফিসে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (রাজশাহী ,খুলনা, বরিশাল বিভাগের) সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির সিরিজ বৈঠক সমাপ্ত

ছয় দিনে ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে দলের নির্বাহী কমিটির সভা শেষ করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামীতে এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাওয়া মানে বিএনপির রাজনৈতিক আত্মহত্যা। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়। নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পুরণের জন্য সারাদেশে আন্দোলন করতে হবে। তবে আন্দোলনের মুল কেন্দ্র রাখতে হবে ঢাকা।

নেতারা বলেন, ওয়ান ম্যান শো দলগুলোর সঙ্গে জোট করে কোনো লাভ হবে না, বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছে, রাজধানী ঢাকা প্রস্তুত করে বিএনপিকে এককভাবে আন্দোলনের ডাক দিতে হবে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবি আদায় করতে সবাই আন্দোলনের কথা বলেছেন। নেতারা বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মতো একই পরণতি ভোগ করতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবির পক্ষে সরকার বিরোধী যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের একই প্লাটফর্মে আনতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবির পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এজন্য দলের কূটনৈতিক উইংকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের করণীয় ঠিক করতে দলীয় নেতাদের মতামত নিতে এই নির্বাহী কমিটির সভা ডাকেন তারেক। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শেষ দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ সংগঠনের অবস্থা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কী করা যেতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।সেই সঙ্গে গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বাংলাদেশের মুক্তি এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

‘‘ যারা আলোচনা করে্ছেন তাদের সব বক্তব্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে আমাদের দলের নীতিনির্ধারণীয সভায় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে এবং তখন আপনারা জানতে পারবেন আমরা কী ধরনের কর্মসূচি গ্রহন করবো।”

গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় ধারাবাহিক বৈঠক। প্রথম দফায় তিন দিনের দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদক মন্ডলী এবং ৯টি অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হয়। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনদিন নির্বাহী কমিটির সদস্যদের ধারাবাহিক বৈঠক হয়। বৃহস্পতিবার শেষ দিনে খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে নির্বাহী কমিটির ৮৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

দুই দফার ধারাবাহিক বৈঠকে ৪৯১ জন সদস্য অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৩ ‘শ জন বক্তব্য রাখেন।

২০১৮ সালের ৭ ফেব্রয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে নেয়ার পরে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাথে এটাই তারেকের প্রথম বৈঠক।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাহী কমিটির বর্তমান সংখ্যা ৫০২ সদস্যের।

সর্বশেষ দলের নির্বাহী কমিটির সভা হয় ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই মামলার সাজায় কারাবন্দি হওয়ায় কয়েকদিন আগে তিনি নির্বাহী কমিটির জরুরী সভা ডাকেন।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ছয়দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকসমূহে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ারি তারেক রহমান সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা স্বশরীরের উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে ছয় ঘন্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এবিএম আবদুস সাত্তার ও রিয়াজ উদ্দিন নসু ছিলেন।