নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির পদযাত্রায় হামলার অভিযোগ, আহত অর্ধশত

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী ;

নোয়াখালীর সদর সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপি ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশী বাধা ও সরকার দলীয় সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মি আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা বিএনপি।

শনিবার জেলার সদর উপজেলার অশ্বদিয়া, নোয়াখালী, চর মটুয়া, আন্ডার চর ইউনিয়ন, চাটখিল উপজেলার সাহাপুর, হাটপুকুরিয়া ঘাটলাবাগ, পরকোর্ট ইউনিয়ন ও কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ এবং সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মি আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্জ মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, বিএনপির পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামীলীগ ও তাদের অঙ্গ ও সহযোসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে জেলার সদরে অন্তত ২৮ নেতা কর্মী আহত হয়েছে। তিনি এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।একইসঙ্গে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। এদিকে জেলা বিএনপি ও এই ঘটনার তীব্রনিন্দা জানিয়ে দুষিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান।

মোহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন, যারা বিএনপির পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় সশস্ত্র হামলা করেছে, তাদেরকে এসব অপকর্ম থেকে ফিরে আশার আহবান জানান। আর তা না হলে এর কঠিন মাশুল দিতে হবে বলে হুশিয়ারি করেন তিনি।

এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ,জেড,এম, গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলমগীর আলো, সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম কিরন, দপ্তর সম্পাদক ওমর ফারুক ট্রপি, সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি সলিম উল্যা বাহার হিরন চেয়ারম্যান, কৃষক দল সাধারণ সম্পাদক জিএস হারুন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আজগর উদ্দিন দুখু, জেলা সেচ্চাসেবক দল সভাপতি সাবের আহমদ সহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা কর্মীগন।

আহতরা হলেন, জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক চাটখিল পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তফা কামাল (৬০) সাহাপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বাবুল (৬০) জামাল হোসেন (৫০) যুবদল নেতা রুবেল হোসেন (২৮) বিএনপি নেতা হারুন মোল্লা (৬৫) বিএনপি নেতা সাইদুল হাসান (৩৫) ছাত্রদল নেতা সাব্বির হোসেন, ছাত্রদল নেতা একরাম সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।

চাটখিল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো.শাহাজান রানা অভিযোগ করেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে চাটখিল উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাহাপুর বাজারে, হাটকুপুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের বিনাতলা এলাকায় ও পরকোর্ট ইউনিয়নের দশঘরিয়া বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৫ জন নেতাকর্মি আহত হয়।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান চেয়ারম্যান বলেন, সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের কানকির হাট বাজারে বেলা ১১টার দিকে সরকার দলের লেলিয়ে দাওয়া সন্ত্রাসীরা তাদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ এসে সরকার দেলীয়দের সাথে এক হয়ে বিএনপির কর্মসূচি পন্ড করার চেষ্টা চালায়।

সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মাহমুদ হাসান শাকিল জানান, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে সোনাপুর ইউনিয়নের খেলাফত বাজারে পদযাত্রার কর্মসূচি শেষ করলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মিরা ককটেল নিক্ষেপ করে। হামলায় সাহাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ফিরোজ সহ তিনজন আহত হয়। পরে ক্ষমতাসীন দলের কয়েজন নেতা যুবদল নেতা ফিরোজের বাবার দোকানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য ও কবিরহাট পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর একরাম উদ্দিন বলেন, কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নে মজিদেরহাট বাজারে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়। এতে তাদের চারজন নেতাকর্মি আহত হয়।

এসব ঘটনা ও অভিযোগের জবাবে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌর মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা উস্কানিমূলক কার্যক্রম করতে চাইলে সেখানে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।