পড়ছে চুল, বাড়ছে টাক, ভেঙে পড়ছেন নেতানিয়াহু

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
0

গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হুঙ্কার, হুমকি ইত্যাদি দিয়েই যাচ্ছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ কারো কথা শুনছেন না। এমন ভাব দেখাচ্ছেন যে তিনি কারো পরোয়া করেন না।

কিন্তু টামি ইলাসভিলি ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার আগে এবং পরের নেতানিয়াহুর ছবি বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে নেতানিয়াহু ব্যাপকভাবে বদলে গেছেন। তার ছবিতে তার মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হলেন ইসরাইলের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি মোট ১৬ বছর নানা মেয়াদে ওই পদে রয়েছেন। তাছাড়া তিনি অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি আরো অনেক পদে ছিলেন।

আবার ২০২০ সালের ২৪ মে তার বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গের বিচার শুরু হয় জেরুসালেমের জেলা আদালতে। ফলে নেতানিয়াহু হলেন একমাত্র ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী, যিনি প্রধানমন্ত্রীর আমলেই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

নেতানিয়াহুর আমলে আরো যেসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০১১ সালে গালাদ শালিতের বন্দী মুক্তি চুক্তি, ২০২০-২০২১ সময়কালে করোনা মহামারি, ২০২৩ সালে বিচার বিভাগ সংস্কার এবং তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ।

গত ৭ অক্টোবর সকালে নেতানিয়াহু ঘুম থেকে জেগে বুঝতে পারেন যে হামাস নিখুঁত একটি হামলা চালিয়ে ইসরাইল রাষ্ট্র, তাকে এবং ইসরাইলি গোয়েন্দাদের পুরোপুরি বোকা বানিয়ে গেছে। এই হামলার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থতার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়।

জেরুসালেম পোস্ট তাদের সিস্টার পাবলিকেশন মারিভ চেহারার বৈশিষ্ট্য দেখে লোকজনের অবস্থা বোঝার জন্য বিখ্যাত টামি ইলাসভিলি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। নেতানিয়াহুর দুটি ছবি তুলনা করেছেন তিনি। একটি তোলা হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর মাত্র ৯ দিন আগে। দ্বিতীয় তোলা হয়েছে ৩১ জানুয়ারি। তার বিশ্লেষণটি বেশ কৌতুহলকর হয়েছে।টামির বিশ্লেষণে দেখা যায়, যুদ্ধের আগের ছবিতে নেতানিয়াহুকে ‘অনেক কম হতাশাবাদী মনে হয়। তার আইভ্রূ ইঙ্গিত দেয় তার আত্মবিশ্বাস ও ক্যারিশমার।’

আর যুদ্ধের পর যে ছবি তোলা হয়েছে তাতে তার আইভ্রূ খুবই পাতলা হলে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তার আইভ্রূ বলতে গেলে বিলীন হয়ে গেছে। এটা ভয়াবহ মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তার চোখের মণি ওপরে, সাদা অংশ প্রকটভাবে দেখা যাচ্ছে। ইতে বোঝা যাচ্ছে, তিনি বর্তমানে মারাত্মক চাপে রয়েছেন। তার ঠোঁট দুটিতে মনে হচ্ছে যে তিনি যুদ্ধের আগের চেয়ে বেশি হতাশাগ্রস্ত। তার চোখ দুটি ঝুঁকে পড়ছে। এতে মনে হচ্ছে যে তিনি ভেঙে পড়ছেন। তার বড় চিবুকটি যুদ্ধের আগে তার কর্তৃত্বের প্রকাশ ঘটাত। এখন তা সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে।

টামি আরো বলেন, নেতানিয়াহুর চুল আগে তার কপালটি আড়াল করে রাখত। কিন্তু যুদ্ধের পর তা প্রকটভাবে বের হয়ে পড়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, ৭ অক্টোবরের পর ‘অনেক কম গোপনীয়তা আছে। যুদ্ধের পর তার চুল কমে গেছে। ফলে তার চেহারা আরো বেশি চোখা হয়ে পড়েছে।ওই নারী বিশ্লেষণকারী আরো বলেন, নেতানিয়াহুর অপরিচ্ছন্ন আইভ্রূ তার প্রধানত মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যুদ্ধের আগে আইভ্রূ ছিল পরিচ্ছন্ন। এখন আর তেমন অবস্থায় নেই। এতে বোঝা যাচ্ছে যে যুদ্ধের আগে নেতানিয়াহু ছিল খুবই ফোকাসড। তিনি জানতেন, তিনি কী চান, কী তাকে করতে হবে। সবাই জানত, নেতানিয়াহু জানেন, কিভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু এখনকার অবস্থা ভিন্ন। এখন স্পষ্ট যে তিনি আবেগগত ও মানসিকভাবে ভয়াবহ রকমের ভেঙে পড়েছেন। তিনি জানেন না, কী করতে হবে। তিনি নিজের মধ্যেই ঘুরপাঁক খাচ্ছেন। তিনি আবেগগত, প্রয়োগিকভাবে এবং মানসিকভাবে ভুল জায়গায় রয়েছেন।

সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট