গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক শ্রমিক স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়েছে তার স্বামী। শনিবার রাতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই নারীর লাশ ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহতের শ্বাশুড়ি নুরুন্নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের নাম- আফরিনা সুলতানা (১৮)। তিনি নেত্রকোনা জেলা সদর উপজেলার ঠাকুরকোনা গ্রামের মৃত রহমত আলীর মেয়ে।
শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩ মাস আগে আফরিনা সুলতানাকে বিয়ে করেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার কামতলা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহীন আলম। বিয়ের পর শাহীন তার মা তার মা নুরুন্নাহার ও স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুরের ১নং সিএন্ডবি (আসপাডা) এলাকার ভাড়া বাসায় থাকেন।
শাহীন মেঘনা শিল্প গ্রুপের পোশাক কারখানায় এবং আফরিনা নোমান শিল্প গ্রুপের হিলাবেড়াইদ এলাকার জোবায়ের স্পিনিং কারখানায় শ্রমিকের চাকরি করতেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে আফরিনাকে মৃতাবস্থায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন শাহীনসহ কয়েকজন।
তারা আফরিনার লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার কওে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহতের থুতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্তের পর তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বাশুড়ি নুরুন্নাহারকে আটক করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসমাউল হুসনা বলেন, অজ্ঞাত কয়েকজন লোক ওই গৃহবধূর লাশ রেখে তড়িঘরি করে চলে যায়। হাসপাতালে আনার আগেই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই খায়রুল ইসলাম জানান, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে আফরিনাকে নির্যাতন করতেন শ্বাশুড়ি নুরুন্নাহার। সন্ধ্যায় বোনের অসুস্থতার খবর পেয়ে আসপাডা এলাকার ভাড়া বাসায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় নি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি ছোট বোন আফরিনাকে তার স্বামী শাহীন আলম শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে। তড়িঘড়ি করে ওই হাসপাতালে গিয়ে বোনের লাশ দেখতে পাই। আফরিনাকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ি তার বোনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। হত্যার পর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে স্বামী শাহীন আলম। তারা হত্যার ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
###