প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টা ও আইন মন্ত্রীর টেলি-সংলাপ চলমান লুটপাটের একটি অডিও-দলিল, তদন্ত ও বিচার চান মীর্জা ফখরুল

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
0

প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টা ও আইন মন্ত্রীর টেলি-সংলাপ চলমান লুটপাটের একটি অডিও-দলিল, তদন্ত ও বিচার চান বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন , ”সম্প্রতি এই কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের টেলিফোন কনভারসেশন (কথোপকথন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। যাতে এই সরকারের দুর্ণীতির একটি প্রকৃতচিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। মন্ত্রী ও উপদেষ্টার বক্তব্যের মাধ্যমে তা স্বীকৃত প্রমান। তাই জাতির কাছে বিষয়টি আজ এটি একটি প্রমানিত সত্যের দলিল।”

আজ মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে গুলশান চেয়ারপার্সন অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মীর্জা ফখরুল বলেন , ”আলোচ্য টেলিফোন আলাপে সংশিষ্ট দুই নেতাকে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে। সেখানে বলতে শোনা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও উপদেস্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের একটি প্রজেক্ট ইনফো নিয়ে জানতে চেয়েছেন সালমান এফ রহমান। জবাবে তা পাস করে দিয়েছেন বলে জানান আইন মন্ত্রী। বিষয়টি টেন্ডারে হবে কী না তাও জানতে চান উপদেষ্টা। তার মতে, এটা জয়ের প্রজেক্ট। এটা টেন্ডার ছাড়াই হতে পারে বলে তিনি সুপারিশ করেন।

এসময় মন্ত্রী উপদেষ্টাকে বাসায় আসার কথা বললে উপদেষ্টা জানতে চান “ওটা পেয়েছেন কী না।”জবাবে মন্ত্রী পেয়েছেন বলে জানান।

এসময় উপদেস্টা সালমান রহমানের একটি রিট পিটিশন কোন আদালতে হবে, কোন বিচারপতি শুনানী করবেন তাও মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে শোনা যায়। বিচারপতিরদের নামও উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষে ওয়াসার একটি প্রকল্প নিয়ে তারা কথা বলেন।

যদিও নিজের কথাবার্তাকে ধামাচাপা দিতে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবার কোন প্রয়োজন নেই বলে দাবী করে বলেছেন একটি “ইনোসেন্ট কনভারসেশন”কে ভিন্ন খাতে নেবার ষড়যন্ত্র করে একটি দেউলিয়া গোষ্ঠী ফোনালাপটি ফাঁস করেছে। লক্ষনীয় তিনি ফোনালাপের কোন বিষয়বস্তু অস্বীকার করেননি। বরং “ইনোসেন্ট কনভারসেশন” এর মোড়কে তা স্বীকার করেছেন। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল দাবি করেছেন ফোনালাপ রেকর্ড করার ব্যবস্থাই নাকি নেই সরকারের কাছে। তিনি জানান এটা তদন্ত করা হবে। এখন প্রশ্ন, তা হলে ফোনালাপ ফাঁস করার জন্য আইনমন্ত্রী যে মহলের দিকে আংগুল তুলেছেন তারা কারা?

ইতি মধ্যেই বিএনপিসহ দেশবাসী এ ঘটনার তদন্ত দাবী করেছে।কিন্তু সরকার এখনও নির্বাক ও নির্বিকার।

এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি আবারও দাবী করছে, দুর্ণীতি নিয়ে সরকারের দুই ক্ষমতাধরের কথোপকথন অস্বীকার না করে আইনমন্ত্রী তা যেহেতু স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই এ ঘটনা কালবিলম্ব না করে অবশ্যই তা তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।

যা একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তথা দেশবাসী মেনে নিতে পারে না। দূর্নীতির সঙ্গে বিচার বিভাগকে জড়িয়ে ফেলার স্বীকৃত অপরাধকে আলাদা ভাবে বিবেচনায় নেবার দাবী জানাচ্ছে বিএনপি। তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য বিএনপি এই মুহূর্তে আইনমন্ত্রী, বিনিয়োগ উপদেস্টা ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টাসহ এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের পদত্যাগ দাবি করছে। অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারে মুখোমুখি দাঁড় করানোর জোড় দাবি জানাচ্ছে বিএনপি।