ফেইসবুকের কল্যাণে ২০ বছর পর স্বজনদের মাঝে ফিরেছে নিখোঁজ যুবক

আপডেট: মে ২৪, ২০২১
0

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ প্রায় ২০ বছর আগে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে নিখেঁাজ হওয়া ব্যাক্তিকে ফিরে পেয়েছেন তার স্বজনরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের কল্যাণে নিখেঁাজ ওই ব্যাক্তিকে রবিবার ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা থেকে ফিরে পান তারা। হারিয়ে যাওয়া স্বজনকে দীর্ঘদিন পর ফিরে পাওয়ায় আনন্দে উচ্ছ্বসিত তার পরিবারসহ গ্রামের লোকজন।

ফিরে পাওয়া ব্যক্তির নাম দুলাল মিয়া (৪২)। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।

দুলাল মিয়ার বড় ভাই আবুল হোসেন বলেন, গত প্রায় ২০ বছর আগে গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার এলাকার একটি খাবার হোটেলে কাজ করতেন দুলাল মিয়া। কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দুলাল ছিল দুই ভাই এবং এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। হঠাৎ কোনো এক দুপুরের পর থেকে সে নিখেঁাজ হয়। বছর তিনেক পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে তাকে বহু খেঁাজাখঁুজি করা হয়। থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে নিখেঁাজ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। নিখেঁাজের পর অনেক খেঁাজাখুঁজি করেও দুলালের সন্ধান পাওয়া যায় নি। ছোট সন্তানের শোকে ২০১৬ সালে আমাদের মা মারা যান। অবশেষে তার হদিস না পেয়ে কোনো দুর্ঘটনায় দুলালের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। অবশেষে তাদের সে ধারণা ভুল পর্যবসিত হয়েছে। প্রায় ২০ বছর পর আমার হারিয়ে যাওয়া ভাইকে ফিরে পেয়ে আত্মীয় স্বজনসহ গ্রামের লোকজন এখন অনেক খুশি। ইতোমধ্যে যদিও সে পরিবারের কিছু সদস্যকে হারিয়েছে তারপরও তাকে পেয়ে পরিবারের সকল সদস্যরা ভীষণ খুশি হয়েছেন। ২০ বছর পর স্বজনদের মাঝে ফিরে আসায় দুলালকে এক নজর দেখার জন্য লোকজন বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছেন।

দুলালের আত্মীয় আমীরুজ্জামান জানান, এসএসসি ব্যাচ-৯২ এর এক ব্যাক্তির ফেইসবুক আইডিতে দুলালের বিষয়ে সম্প্রতি একটি পোস্ট দেওয়া হয়। পরে সাদিকুল নামের এক ব্যাক্তির মাধ্যমে ওই আইডির সুত্র ধরে দুলালের সকল খবরা-খবর নেওয়া হয়। রবিবার ভোরে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগঁাও ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রাম থেকে দুলালকে চিহ্নিত করা হয়। এসময় ওই এলাকার শত শত মানুষ জড়ো হয়। অনেকের সাহায্য সহযোগিতায় সে একাধিক মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থকড়ি এলাকার গৃহিণীদের কাছে জমা করে রাখত। “আমরা দুলালকে চিহ্নিত করে নিয়ে অসার সময় ওইসব নারীরা তাদের কাছে রাখা দুলালের অর্থকড়ি বাবদ ১৫ হাজারের বেশি টাকা ফেরত দিয়ে যায়।”

সরাইলের সূর্যকান্দি এলাকার ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান, দুলাল প্রায় ২০ বছর আগে থেকে সরাইলের বিভিন্ন এলাকায় ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতো। অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে অনেকের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে চেয়ে চিন্তে দিনাতিপাত করত। বিয়ে সাদী না করায় এলাকার যেখানেই ইচ্ছা সেখানেই সে রাত্রি যাপন করত।