বঙ্গবাজারে সংগঠিত অগ্নিকান্ডের ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন—বিআইপি

আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৩
0
file photo

ঢাকা প্রতিবেদক:

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের নগর এলাকাসমূহে অগ্নিকান্ডের ঝূঁকি বেড়ে যাবার প্রেক্ষিতে প্রায়শঃই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে, যার ফলে জীবন ও সম্পদের অপূরণীয় ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বিগত ০৪ এপ্রিল ২০২৩-এর ভোরে ঢাকার বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) গভীরভাবে শোকাহত এবং এই মর্মান্তিক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীদের প্রতি বিআইপি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে। একইসাথে, নগর এলাকার সঠিক পরিকল্পনা, ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ ভবন নির্মাণ, কার্যকরী উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু নজরদারি থাকলে নগর এলাকায় এ ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে বিআইপি মনে করে।

আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও তদারকির ব্যর্থতার কারনে ঢাকায় ক্রমাগত এমন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। ২০১০ সালের নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ২০১৯ সালের চকবাজার অগ্নিকান্ডের ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নেইনি। নিমতলীর ঘটনায় তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশের বাস্তবায়ন হলে এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়ত আর দেখতে হত না।

বিআইপি বারংবার বলে আসছে যে ঢাকার এলাকা ভিত্তিক নগর পরিকল্পনা, ভূমির পুনঃউন্নয়ন, বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ এবং সেবা সংস্থা সমূহের সঠিক নজরদারির মাধ্যমে ঢাকাকে দূর্যোগ ঝুঁকিমুক্ত ও বসবাস উপযোগী করা সম্ভব। সরকারের সেবা সংস্থা সমূহের সঠিক পরিকল্পনা, কার্যকরী উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু নজরদারি না থাকায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

জননিরাপত্তা ও জনস্বার্থ রক্ষা করবার স্বার্থে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতিকে সামনে রেখে এগোতে হবে। একইসাথে, ঢাকার ভূমি উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নকশা প্রনয়নের সময় দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কার্যক্রমের বিস্তারিত বিঁধিমালা প্রণয়ন ও সংরক্ষন করতে হবে বলে বিআইপি মনে করে।

বিআইপি মনে করে মানুষের জান-মালের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বঙ্গবাজারে সংগঠিত অগ্নিকান্ডের ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। তদন্তের পাশাপাশি এ ঘটনার প্রেক্ষিতে করণীয় সমূহ নির্ধারণ করে প্রাপ্ত সুপারিশ সমূহের বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক। এছাড়াও যেকোন ভবন নির্মাণের সময় প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রসমূহরে মানসম্মত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিকান্ড সংগঠিত হলে ফায়ার সার্ভিসের সমর্থতা এবং দূর্ঘটনাস্থলে সময়মতো পৌছানের সম্ভাব্যতা বিবেচনায় রেখে ভবনের অগ্নি নির্বাপক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক তৈরির মাধ্যমে সামাজিক প্রস্তুতি বাড়াতে হবে, তবেই ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বিআইপি মনে করে।

বিআইপি মনে করে, ঢাকা, তথা সারাদেশের সকল এলাকায় সুষ্ঠু পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে সরকারকে সকল ধরণের পেশাগত সহায়তা দিতে বিআইপি সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। আমরা জানি যে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সর্বদাই উত্তম, এজন্যই নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অগ্নি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া অপরিহার্য।