বাধা দিলে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন আরও বেগ পাবে–বুড়িচংয়ে মীর্জা আব্বাস

আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২
0
file photo

বাধা দিলে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন আরও বেগ পাবে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, এক সময় পাকিস্তানী হায়ানার বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ যেভাবে জেগেছে। যেভাবে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে আন্দোলন করেছে। ঠিক সেইভাবে আজ দেশের মানুষও ১৪৪ ধারা ভেঙ্গেছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। কিন্তুু জনগণ তা রুখে দিয়েছে।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুরের গঙ্গাচড়ার বুড়িরহাট ঈদগাহ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার দেশকে মাফিয়া রাজ্যে পরিণত করেছে। দেশের সেনাবাহীনির সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ সেনাবাহিনীকে কলঙ্কিত করেছেন। তাঁর দুই ভাই হারেস ও জোসেফ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাদের রাষ্ট্রপতি মাফ করে দেন। অথচ একটি ছোট মামলায় তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হয় না। এটা মেনে নেয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। বেড়াতে গেলেও নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। কোথাও নিরাপত্তা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণ আজ নাভিশ্বাস হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তারপরও এই ভোট বিহীন আওয়ামী সরকার দেশের মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করছে। দেশকে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ভোট বিহীন সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। তাই এই অবৈধ সরকার করোনার দোহাই দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যদি সত্যিই করোনা বেড়ে থাকে তাহলে বিএনপি দেশের মানুষের কথা ভেবে এমনিতেই তা বন্ধ রাখবে। কারণ বিএনপি এই দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসে।

ঢাকা সিটির সাবেক এই মেয়র বলেন, ১৯৭১ সালে দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে আরেকটা যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিবেন তারেক রহমান। আমরা তার নেতৃত্বেই এই যুদ্ধে জয়ী হয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। দেশে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবো। তাই সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আব্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিব উন নবী খান সোহেল।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সারাদেশের মানুষ আজ জেগেছে। তারা একটি দাবিই করছে সেটা হলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা। কিন্তু ভোট বিহীন এই সরকার দেশের মানুষের সেই চাওয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা দেখিয়ে তাকে আটক করে রেখেছে। উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রংপুরে বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে অনেক শক্তিশালী। আজকের এই জনসভাই তরা প্রমাণ। পথে পথে নেতাকর্মীর বাধা দেয়া হয়েছে। হয়রানী করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের বাধা ডিঙিয়ে আজকের এই সমাবেশ জন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পদাক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল খালেক, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি চৌধুরী মেহেবুল্লাহ আবু নুর, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক উম্মে হাবিবা, ছাত্রদলের রংপুর বিভাগীয় টিম প্রধান সহ-সভাপতি মামুন খান প্রমুখ।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রংপুর মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামসুজ্জামান সামু, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান লাকু, গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াহেদুজ্জামান মাবু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়ান হোসেন শাহান, জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক ঝন্টু, মহানগর যুবদল সভাপতি মাহফুজ উন নবী ডন, সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজ, মহানগর কৃষক দল আহবায়ক শাহ নেওয়াজ লাবু, মহিলা দল মহানগর কমিটির সভাপতি রেজেকা সুলতানা ফেন্সি, সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর আরজানা বেগম, ওলামা দল কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক ও রংপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইনামুল হক মাজেদী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন জিহাদী, মহানগর ছাত্রদল সভাপতি নুর হাসান সুমন, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম জিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব চৌধুরী, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মনিরুজ্জামান হিজবুল, সাধারণ সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহাসহ আরও অনেকে।

সমাবেশে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভাগের বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।