বানারীপাড়ায় পুলিশ ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে চোর সন্দেহে ইজিবাইক চালককে পিটিয়ে হত্যা

আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২৩
0

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি :
বরিশালের বানারীপাড়ায় পুলিশ ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে চোর সন্দেহে আঃ ছালাম বেপারী (৬০) নামের এক ইজিবাইক চালককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আঃ ছালাম বেপারী উপজেলার চাখার ইউনিয়নের বলহার গ্রামের মৃত আ.কাদের বেপারীর ছেলে।
নিহতের স্ত্রী জানান. রোববার রাতে তার স্বামী পুলিশ ডিউটি করতে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়। যাবার সময় বলে যায়, নাতির দিক খেয়াল রেখো। কেউ আসলে দরজা খুলবা না। স্বামী ফিরে আসল লাশ হয়ে। জানা গেছে, থানা পুলিশের ডিউটি শেষ করে আ. ছালাম রোববার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কের চৌয়ারীপাড়া নামক স্থান অতিক্রম করার সময় স্থানীয় আলমগীর ও আ. রব সহ ১০/১৫ জনের একদল লোক ইজিবাইকের সামনে গাছ ফেলে গতিরোধ করার চেষ্টা করে।

ভয় পেয়ে আঃ ছালাম গাড়ি দ্রুত চালিয়ে চলে যেতে চাইলে গাড়ির সামনের গ্লাসে আঘাত করা হয়। এতে কাচ ভেঙ্গে যায় এবং গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের গাছের সাথে ধাক্কা লেগে থেমে যায়।
এসময় ওই এলাকার আলমগীর,আ. রব ও নাঈমসহ বেশ কয়েকজন মিলে তাকে কিল-ঘুষি ও মোটা গজারি লাঠি দিয়ে নির্দয়ভাবে এলোপাথারি পিটাতে থাকে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারধরের সময় বৃদ্ধ আঃ ছালাম হামলাকারীদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে করুন আকুতি জানিয়ে বলেন, ওরে তোরা আমারে মারিস না, আমি চোর না, আমি পুলিশ ডিউটি করে এসেছি। কিন্তু লাথি ঘুৃষি ও গজারীর আঘাতের পর আঘাত চলতে থাকে। এসময় তিনি সবার কাছে একটু পানি চেয়েও পাননি। তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন তোমরা থানায় খবর নেও তবুও আমাকে মেরো না, আমার বুকে ব্যথা । একথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে তিনি ঢলে পড়েন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আ.রব,এমরান ও আল-আমিন নামের ৩ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে আল-আমিনের স্ত্রীর দাবি তার স্বামী নির্দোষ। আল-আমিন আহত ইজিবাইক চালক আ. ছালামকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলো।

এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, মুমূর্ষু অবস্থায় আ. ছালামকে পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পরে তার মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে এবং তিনজনকে জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে সচেতনমহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে অত গভীর নির্জন রাতে কোন নিরাপত্তা ছাড়া তাকে থানা থেকে কেন বাড়ি যেতে দেওয়া হল। ###
রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া
তারিখ.২৮-০৮-২০২৩ইং