বানারীপাড়ায় সরকারি পুকুর ভরাট করে দখলের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
0

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥
বরিশালের বানারীপাড়ায় পৌরশহরে প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি পুকুর ভরাট করে অবৈধ দখল করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারী সোমবার সকালে বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল প্যানেল মেয়র অধ্যাপক এমাম হোসেনকে প্রধান ও স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফিরোজ ঢালী এবং পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী লোকমান হোসেনকে সদস্য করে তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল বলেন,গঠিত এ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে এ ব্যপারে পৌরসভার আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা ভরাট হয়ে যাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ ওই পুকুরের সম্পত্তি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার দিয়ে মেপে সরকারি খাস সম্পত্তিতে লাল নিশান সাঁটিয়েছেন। এ ব্যপারে ইউএনও রিপন কুমার সাহা বলেন, পুকুরের সরকারি খাস সম্পত্তির অংশটুকু ইতোমধ্যে মেপে দখলমুক্ত করে লাল নিশান দেওয়া হয়েছে। এদিকে ইউএনও’র উদ্যোগে সরকারি খাস অংশ যেভাবে পুকুরের পাড় ধরে লম্বালম্বি ভাবে মাপজোখ করা হয়েছে তাতে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা পুরনো নকশানুযায়ী মাপজোখ করে পুকুরটিকে জনস্বার্থে পুর্বের রূপে ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত,১১ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার দৈনিক কালেরকন্ঠে ‘সরকারি পুকুর ভরাট করে দখল’ ও ১০ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে ‘প্রশাসনের নাকের ডগায় ভরাট করা হচ্ছে সরকারি পুকুর’ শিরোণামে সচিত্র রিপোর্ট প্রকাশিত হলে বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল সেই পুকুর ভরাট কাজ বন্ধ করে দেন। শুক্রবার সকালে তিনি কাজ বন্ধ করে দিয়ে সন্ধ্যায় অভিযোগকারী ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয় জনসাধারণ ও অভিযুক্ত নাঈম মোল্লাকে নিয়ে পৌরসভায় বৈঠকে বসেন। এসময় তিনি ওই পুকুরের সম্পত্তির বিষয়ে দু’পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে প্রমান পান পুকুরের ৩০ শতক সম্পত্তির মধ্যে ১২ শতক সরকারি খাস সম্পত্তি রয়েছে। এসময় পৌর মেয়র পৌরসভার অনুমতি না নেওয়া এবং সরকারি খাস সম্পত্তিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ পুকুর ভরাট করায় নাঈম মোল্লাকে সর্তক করেন। উল্লেখ্য বানারীপাড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্দিহার গ্রামে উপজেলা পরিষদ লাগোয়া হাল ৩১১ নম্বর দাগের ৩০ শতক সম্পত্তিতে একটি বৃহৎ আকারের পুকুর রয়েছে। যারমধ্যে প্রায় ১২ শতক সরকারি খাস সম্পত্তি । ওই পুকুরটি দীর্ঘ বছর ধরে পাশ্ববর্তী ২০-২৫টি পরিবার ব্যবহার করে আসছিল। গত কয়েকদিন ধরে ওই এলাকার রিপন ঢালী ও নাঈম মোল্লা এ পুকুরটি বালি ভরাট করে দখল করে নিচ্ছিল। স্থানীয়রা বাধা দিলেও তাতে তারা কর্নপাত না করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাইপের মাধ্যমে বালি ভরাট কাজ অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছিল। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয়রা বরিশাল জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,পৌরসভার মেয়র,উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ৪ দিনেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশের পরে পৌর মেয়রের উদ্যোগে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীলের এ উদ্যোগকে স্থানীয় সচেতনমহল সাধুবাদ জানিয়েছেন।
রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া
তারিখ.১৪-০২-২০২২ইং