বামনায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যু, অবৈধ ক্লিনিক সীলগালা

আপডেট: এপ্রিল ১১, ২০২৩
0

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা :

বরগুনার বামনা উপজেলা সদরে বেসকারী একটি ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া যায়। আজ মঙ্গলবার ভোর রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে বামনা উপজেলা সদরের কলেজ রোডস্থ ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এমন অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তাকে নিয়ে যৌথ অভিযানে অত্র ক্লিনিকে গেলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যাওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত কাউকে না পয়ে ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেয় । এসময় এ ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি তদন্তও কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় ঘ টনা সূত্রে জানা যায়, বামনা উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মোঃ মোস্তফা গাজীর কন্যা ও নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মোসা. মোর্শেদা বেগম (৩৪) গতকাল সোমবার বিকালে সন্তান প্রসবের ব্যাথা শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ে আসলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজারের প্রস্তুতি নেয়। পাশর্^বর্তী পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ মেঃ রাকিবুর রহমানকে খবর দিয়ে এনে ঐ প্রসূতি মায়ের সিজার করান। প্রসূতি মা একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেয়। অপারেশন সম্পন্ন করে ডাঃ আবার তার কর্মস্থলে চলে যায়।

পরবর্তীতে প্রসূতি মায়ের পেটে ব্যাথা বাড়লে এবং আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের লোকজন ডাক্তারের সাথে বার বার যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগের পরামর্শ দেয় এবং মঠবাড়িয়া নিয়া যাওয়ার জন্য বললে রোগীকে মঠবাড়িয়া নিয়ে যাওয়া হয়। মঠবাড়িয়া বসে গভীর রাতে রোগী জ্ঞানহীন হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে নিয়া যেতে বলেন। তারা বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পথে ভান্ডারীয়া নামক স্থানে বসে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে লাশ নিয়ে পরিবারের লোকজন অভিযুক্ত ক্লিনিকের সামনে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানালে পুলিশ, সাংবাদিক ও প্রশাসন ঘটনা স্থলে পৌছালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্লিনিকটিতে সীলগালা করে দেয়।

এ ঘটনায় বামনা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহতর লাশ উদ্ধার শেষে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য প:প: কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জান মনির জানান, এমন অভিযোগ পেয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তাসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে ও অত্র ক্লিনিকে কোন বৈধ্য কাগজ-পত্র না পাওয়ায় সিলগালা করা হয়েছে। ক্লিনিকের লাইসেন্স প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অন্তরা হালদার বলেন, এমন ঘটনা শুনে আমি ক্লিনিকে যাই। সেখানকার ভর্তিকৃত রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে এবং কাগজ পত্র না দেখাতে পারায় ক্লিনিকটিকে সীলগালা করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।