বালিয়াডাঙ্গীতে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃক গ্রাহক হয়রানী ও মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন

আপডেট: এপ্রিল ১৩, ২০২৩
0

মো. জুলফিকার আলী শাহ্, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি॥

আজ (১৩ এপ্রিল-২৩) বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টায় বালিয়াডাঙ্গী নিউ আগমনী হলরুমে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ভূয়া বিল বানিয়ে গ্রাহক হয়রানী ও মামলার নোটিশের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ভুক্তভোগী গ্রাহক মোঃ হারুন অর রশিদ সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান এবং ভুয়া বিল বানিয়ে গ্রাহক হয়রানী ও মামলার নোটিশের প্রতিবাদে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মোঃ হারুন অর রশিদ অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন-
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আসসালামু আলাইকুম। হিন্দু ভাইদের আদাপ।
আমি ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন গ্রাহক। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত কয়েক বছর পূর্বে একটি বাণিজ্যিক সংযোগ নেই। যার মিটার নাম্বার-৫৬৫০ ও বহি নং-১৫২। এক সময় ব্যবসা বন্ধ হলে গত ২০০৮ সালে বৈদি্যুতিক সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিচ্ছিন্ন করার পরও আমার নামে ওই মিটারের বৈদ্যুতিক ভুয়া বিল আসে। এ বিষয়ে আমি বালিয়াডাঙ্গী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার কনক সারওয়ারের সংগে যোগাযোগ করি এবং ভুয়া বিদ্যুৎ বিল আসার বিষয়টি অবগত করি। তিনি আমার উপস্থিতিতেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিলিং শাখায় কথা বলেন এবং আমাকে নিশ্চিত করেন যে আর ভুয়া বিল আসবে না। এর পরে আমার কাছে আর ওই মিটারের কোন বিদ্যুৎ বিল আসে নি। কিন্তু গত ২০১৭ সালে মামলার একটি নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার নামে বৈদ্যুতিক বিল বকেয়ার দায়ে মামলা হয়েছে। মামলা নং-৩৬/২০১৭। মামলা সমনজারি নোটিশের প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি অফিসের জেনারেল ম্যানেজারের সংগে কথা বলি। তিনি সব কিছু শুনে ওয়ান পয়েন্ট করতে বলেন। আমি ওয়ান পয়েন্টের আবেদন দিলে ওয়ান পয়েন্টের ফলাফলে জানান-২০০৮ সালের তিন মাসের, ২০০৯ সালের ১২ মাসের, ২০১০ সালের ১২ মাসের, ২০১১ সালের ১ মাসের ও সংশোধিত ১ মাসের বিলসহ ভ্যাট ও অন্যান্য বাবদ ১১০৩৮/- টাকা পাওয়া রয়েছে। সেই সংগে আরো ২০০/- টাকা যোগ হবে। মোট ১১২৩৮/- টাকা পরিশোধ করতে হবে। যদি বিল পরিশোধ করি তবেই বিলের কাগজ বের করে দিবে। আমি পরিশোধ করতে ইচ্ছুক হলে আমাকে বিলের কাগজ বের করে দেন। সেটি নিয়ে জেনারেল ম্যানেজারের সাথে পুনরায় দেখা করলে তিনি সব কিছু শুনে বলেন “যেহেতু মামলা হয়েছে এখানে আমার আর কিছুই করার নেই। আপনি উল্লেখিত ১১২৩৮/- টাকা পরিশোধ করে দেন। পরবর্তিতে এই বিষয়টি দেখব”। মামলার কারনে আমি সমুদয় টাকা পরিশোধ করি। টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে ঠাকুরগাঁও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সমুদয় টাকা বুঝে পেয়েছেন মর্মে ১৮/০৪/২০১৭ইং তারিখে দিনাজপুর বিদ্যুৎ আদালত বরাবরে বকেয়া বিল পরিশোধের একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রেরণ করেন। সেই সংগে আমাকেও একটি অনুলিপি প্রদান করেন। প্রত্যয়ন পত্র প্রাপ্তি সাপেক্ষে আদালত উক্ত মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। (পরিশোধিত বিলের কপি ও প্রত্যয়ন পত্র সংযুক্ত)

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
গত বছর আমাকে আবারও ওই মিটারের বকেয়া বিলের একটি নোটিশ প্রেরণ করেণ। আমি নোটিশটি নিয়ে পল্লী বিদ্যৎ সমিতিতে যোগাযোগ করলে সকল কাগজ পত্র দেখে ভুল স্বীকার করেন। এ রকম আর হবে না মর্মে জানান। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের সহিত জানাচ্ছি যে, গত ৩ এপ্রিল আমাকে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী থেকে বিচ্ছিন্ন করা ওই ৫৬৫০ নং মিটারের বিপরীত আবারো বকেয়া বিল আদায়ের নিমিত্তে একটি চুড়ান্ত নোটিশ প্রেরণ করেণ। নোটিশটিতে বলা হয়েছে যে, গত ২০১০ সালের জুন মাসের ৪২০/- টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু ২০১০ সালের জুন মাসের বিলটি আমি গত ১৮/০৪/২০১৭ইং তারিখেই পরিশোধ করি। (নোটিশ সংযুক্ত)
প্রিয় সাংবাদিকগণ,
পল্লী বিদ্যুৎ আমাকে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত হয়রানী করেছে। আমার মতো অসংখ্য মানুষ আজ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুয়া বিল, মামলাসহ সমিতির দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে জেলাসহ গোটা দেশের মানুষকে ভুয়া বিলসহ দূর্নীতির কথাগুলো গণমাধ্যমে তথা অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তুলে ধরার জন্য অনুরোধ করছি।
অনুরোধে
(মোঃ হারুন অর রশিদ)
ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুতের ভূয়া বিলে ভুক্তভোগী গ্রাহক
তারিখ: ১৩/০৪/২০২৩

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আজ সাংবাদিক সম্মেলন করছি এবং যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে পরবর্তীতে মানববন্ধন সহ প্রয়োজনে আদালতে মামলা করবো।

তারিখ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩
মোঃ জুলফিকার আলী শাহ্
বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও