বিএনপির সঙ্গে বৈঠক: সরকারের শেষ সময়ে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়তে পেশাজীবীদের পরামর্শ

আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২১
0
file photo

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবী নেতারা। তারা এ-ও বলেছেন, আন্দোলনের নেতৃত্বে বিএনপিকেই থাকতে হবে। হায়ার করে কোনো নেতা আনার প্রয়োজন নেই। তারেক রহমানের নেতৃত্বেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

এখন থেকেই ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি ধরে আন্দোলন জোরধার করতে হবে ধীরে ধীরে। আর সরকার পতনে চূড়ান্তভাবে মাঠে নামতে হবে সরকারের শেষ দিকে এসে। এতে শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা থাকলেই হবে না, জনসম্পৃক্ততাও জরুরি। জনগণকে ছাড়া বিগত সময়ে কোনো আন্দোলন সফল হয়নি, হবেও না। সেই সঙ্গে প্রস্তুতি ছাড়া কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত না নিতেও পরামর্শ দেন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল রুদ্ধদ্বার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। তার সভাপতিত্বে বৈঠকের মূলমঞ্চে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে চলা মতবিনিময়সভায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জাতীয় প্রেসক্লাব, ইউট্যাব, বিএফইউজে ও ডিইউজের (একাংশ), ডিআরইউ, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, জি-৯, জিয়া পরিষদ, দেশের প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

গত শুক্রবারও আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, কৃষিবিদসহ ২০টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিএনপি।

বৈঠকসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ভোটের আগের রাতে কী হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি নেতারা তা জানেন না এটি দুর্ভাগ্যজনক। এত কম তথ্য জানা নেতাদের দিয়ে তো রাজনীতি হয় না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, ‘সীমাবদ্ধতার মাঝেও দেশীয় গণমাধ্যমে সরকারের নানা দুর্নীতির খবর প্রকাশ হচ্ছে। বিদেশি মিডিয়াও মাঝে মধ্যে করছে। সরকারের এ দুর্নীতি, দুঃশাসন ও ব্যর্থতা ফলাও করে প্রচার করতে হবে। এ জন্য বিএনপির একটি গবেষণা সেল থাকা জরুরি। প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিকে তা জানাতে হবে। সেই সঙ্গে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। হালকা আন্দোলন করে লাভ হবে না, দাবি আদায়ে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তা হলেই কেবল শেখ হাসিনা সরকারের পতন সম্ভব।’

একজন সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, ‘প্রতিদিন জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের মুখবন্ধ করতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ব্যর্থতা ও দুর্নীতিসহ নানা নেতিবাচক দিক তুলে ধরে বক্তব্য দিতে হবে। পাশাপাশি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ইতিবাচক দিক জাতির সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। শিক্ষিত যুবকরা আজ বেকার। এখন থেকে এসব জনস্বার্থসংক্রান্ত ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি করতে হবে। সরকারের শেষ দিকে গিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’